ফেনীতে গৃহকর্মীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

ছবি: সমকাল
ফেনী সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৪:৪৫
ফেনী পৌরসভার ফলেশ্বর এলাকা থেকে মাসুদা বেগম নামে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম ফারুক মজুমদারের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মাসুদা বেগম ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের পিঠাপাশারী এলাকার মোস্তফা ভূঁঞা বাড়ির সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। তার এক মেয়ে ও চার ছেলে রয়েছে। তিনি গত ৮ বছর ধরে ফারুক কমিশনারের বাড়ির গৃহপরিচারিকা ছিলেন।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, ফেনী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর গোলাম ফারুক মজুমদারের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের ঘরে কাজ করার জন্য সোমবার মাসুদা বেগমকে ডেকে আনা হয়। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বাড়ির লোকজন বকুলের ঘরের সোফার নিচে গলাকাটা অবস্থায় ওই নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ, পিবিআই, সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপর পৌনে ২টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ৯টা ১৩ মিনিটে কালো প্যান্ট ও সাদা চেক শার্ট পরিহিত অজ্ঞাত এক যুবক ভবনে প্রবেশ করে। ৯টা ১৭ মিনিটে ওই যুবক ভবন থেকে দৌড়ে বের হয়ে যায়।
ফেনী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বাড়ির মালিক গোলাম ফারুক মজুমদার বলেন, বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে আমি চায়ের দোকানে বসা ছিলাম। বাসা থেকে মোবাইলে খবর পেলাম চোর-ডাকাত ঢুকেছে। খবর পেয়ে দৌড়ে বাসার ওঠে দেখি রক্ত। সিসি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে এক যুবক বাসায় ঢুকে কিছুক্ষণ পর আবার বের হয়ে গেছে।
বাড়ির অপর মালিক গোলাম হায়দার মজুমদার ঝন্টু বলেন, আমার স্ত্রী খবর দেয় বাড়িতে দুর্ঘটনা হয়েছে তাড়াতাড়ি আসো। আমি দোকান থেকে দ্রুত আসি। এর মধ্যে ডাকাত চলে যায়। সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে, একটা ছেলে গেট দিয়ে বাসায় ঢুকে উপরে ওঠে। চার মিনিটের মধ্যে সে দ্রুত বাসা থেকে নেমে চলে যায়। এর মধ্যে সে হত্যা করে পালিয়ে যায়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীর বিচার চাই। যে হত্যা করুক তার ফাঁসি চাই।
নিহতের মেয়ে শাহেনা আক্তার বলেন, আমার মাকে খুঁজে পাচ্ছে না বলে রাত সাড়ে ৯টায় ফোন আসে। মাকে খুঁজতে বাসা থেকে বের হতেই আমার সেজো ভাইয়ের স্ত্রী খবর দেয় আম্মাকে কে বা কারা গলাকেটে হত্যা করেছে। আমার মায়ের হত্যাকারীর বিচার চাই।
নিহতের ভাগ্নে কামাল উদ্দিন বলেন, আমার খালাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে এসে ভবনের দোতলার সামনের কক্ষে মরদেহ দেখতে পাই। পরে পিবিআই ও সিআইডি ঘটনাস্থলে এসে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ ও তদন্তের কাজ শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজের অজ্ঞাত যুবককে শনাক্তে কাজ চলছে। এ বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
- বিষয় :
- গলাকেটে হত্যা
- মরদেহ উদ্ধার