লাল-সবুজ পতাকা হাতে ১৫০ দেশে আজমেরী

ঘানার কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে কাজী আসমা আজমেরী সমকাল
মামুন রেজা, খুলনা
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:৫৪
ছোটবেলা থেকেই ঘোরাঘুরির শখ কাজী আসমা আজমেরীর। সেই শখ থেকে ২০০৯ সালে নেমে পড়েন বিশ্ব ভ্রমণে। এরপর আর থামেননি। বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে একে একে পাড়ি দিয়েছেন ১৫০টি দেশ। এতেই শেষ নয়। বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করতে চান আজমেরী। পৃথিবীর সব প্রান্তে ওড়াতে চান লাল-সবুজের পতাকা।
খুলনা নগরীর রায়পাড়া এলাকার কাজী গোলাম কিবরিয়া ও কাজী সাহিদা আহমেদ দম্পতির মেয়ে আজমেরী। প্রতি দেড় বছর পর পর তিনি ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন।
ভ্রমণের শুরু কীভাবে, জানতে চাইলে ৩৬ বছরের আজমেরী বলেন, ‘ছোটবেলায় খুব ভ্রমণকাহিনি পড়তাম। তখন থেকেই বিশ্ব ভ্রমণের আগ্রহ তৈরি হয়। সেই আগ্রহ থেকে ২০০৭ সালে প্রথমে থাইল্যান্ড যাই। নীল সমুদ্র দেখার পর মনে হয়েছিল, ভ্রমণের জন্য যত টাকা খরচ হয়েছে তা উসুল হয়ে গেছে! এরপর ২০০৯ সালে নেপালে যাই। মূলত নেপাল দিয়েই বিশ্ব ভ্রমণ শুরু করি। হিমালয় দেখার পর পুরো বিশ্বের সৌন্দর্য আমাকে টানতে থাকে। ওই বছর ভারত, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় যাই। সবশেষ সেনেগাল, গাম্বিয়া, আইভরিকোস্ট ও ঘানা ঘুরে গত ৫ আগস্ট দেশে ফিরি। ঘানা ছিল আমার ১৫০তম দেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে যখন ঘোরাঘুরি শুরু করি, তখন একবার মনে হয়েছিল, ৫০টি দেশে যাব। ৫০ দেশ ঘোরার পর মনে হলো ১০০ দেশে যাব। এরপর জাতিসংঘের আওতাভুক্ত ১৯৩টি দেশেই যাওয়ার ইচ্ছা জাগে। এরই মধ্যে ১৫০টি দেশ ঘুরেছি। আরও ৪২টি দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে।’
ঘুরতে বেরিয়ে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন আজমেরী। তিনি বলেন, ‘সব দেশই আমার ভালো লেগেছে। একেক দেশের একেক ধরনের সৌন্দর্য। সব দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মানুষ আমাকে মুগ্ধ করেছে। তবে সবচেয়ে ভালো লেগেছে জর্ডান, স্পেন, মরক্কো ও মিসর। একবার ভিয়েতনাম ইমিগ্রেশনে হয়রানির শিকার হয়েছিলাম। একা মেয়ে কেন ঘুরতে যাচ্ছি, সে কারণে সাইপ্রাস ইমিগ্রেশন আটকে দিয়েছিল। ২৭ ঘণ্টা জেলে ছিলাম। তখন আমার মধ্যে আরও জিদ চাপে– বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে আমি সব দেশে যাবই।’
ঘুরতে যাওয়ার এত টাকা কোথায় পান– জানতে চাইলে আজমেরী হেসে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘যার সঙ্গেই কথা হয়, সে এই প্রশ্ন করবেই। আমি ছোটবেলা থেকে টাকা জমাতাম। এ ছাড়া কয়েক বছর নিউজিল্যান্ড ছিলাম। সেখানে রেডক্রসে চাকরি করেছি। পরে অস্ট্রেলিয়ার একটি কোম্পানিতে অনেক দিন চাকরি করেছি। কিছু ব্যবসাও আছে। সেই টাকা দিয়েই আমি ভ্রমণ করি।’
আজেমেরী জানান, আগামী মাসে আবারও উড়াল দেবেন। এখন অপেক্ষা আলজেরিয়াসহ চার দেশের ভিসা পাওয়ার।
- বিষয় :
- পতাকা