বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া
নিলামে বিক্রি হচ্ছে জব্দ করা ৬০ কোটির পাথর
ছবি: ফাইল
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ০২:৫০
সিলেট সীমান্তের কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া এবং গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি থেকে জব্দ করা সাড়ে ৪৬ লাখ ঘনফুট পাথর নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিন বছর আগে লোভাছড়ায় ৪৪ লাখ ২৩ হাজার এবং সরকার পতনের পর বিছনাকান্দি এলাকা থেকে ২ লাখ ৪৮ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি ও পরিবেশ অধিদপ্তর।
সূত্র জানায়, জব্দকৃত এসব পাথরের বাজারমূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা। রবি ও মঙ্গলবার জব্দ করা পাথর নিলামের পৃথক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)। বিএমডি পরিচালক (খনি ও খনিজ) মামুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত নিলাম বিজ্ঞপ্তিটি ব্যুরোর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে যাদের কাছ থেকে এসব পাথর জব্দ করা হয়েছিল, তারাই নিলামে অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দু-একদিনের মধ্যে তাদের শিডিউল জমা দেওয়ার কথা। রোববার লোভা নদীর দুই পাশে স্তূপাকারে জব্দকৃত পাথরের রিট মামলাবহির্ভূত ৪৪ লাখ ২৩ হাজার ঘনফুট পাথর উন্মুক্ত নিলামে বিক্রির কথা জানানো হয়। বুধবার থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও বিএমডি থেকে শিডিউল কেনার কথাও বলা হয়েছে।
২০২১ সালের মার্চে লোভাছড়া পাথর কোয়ারির ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেখান থেকে এক কোটি পাঁচ লাখ ঘনফুট পাথর উত্তোলন করা হয়। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সেসব পাথর জব্দ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরে পাথরের মালিকানা দাবি করে একাধিক পাথর ব্যবসায়ী উচ্চ আদালতে রিট করেন। বিএমডি জব্দকৃত পাথর নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও রিট থাকার কারণে তা বিক্রি করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি এলাকা থেকে জব্দ করা পাথরের পরিমাণ উল্লেখ করা হয় ২ লাখ ৪৮ হাজার ৮০৯ ঘনফুট। বুধবার থেকে ৬ জানুয়ারি বিএমডিসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে শিডিউল সংগ্রহ করা যাবে। ৭ জানুয়ারি দরপত্র দাখিল ও ৮ জানুয়ারি খোলা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সরকার পরিবর্তনের পর বিছনাকান্দি পর্যটন কেন্দ্রের জিরো পয়েন্ট ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর লুট হয়। প্রশাসনের তথ্যমতে, চার মাসে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ লাখ ঘনফুট পাথর লুট হয়। গত বছর অক্টোবরে প্রকাশ্যে পাথর লুট শুরু হলে অভিযানে নামে প্রশাসন। ৩ নভেম্বর এক অভিযানেই জব্দ করা হয় ১ লাখ ২৫ হাজার ৯০০ ঘনফুট পাথর। এর আগে ৩০ অক্টোবর গোয়াইনঘাটের তোয়াকুল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বাদী হয়ে পাথর চুরির অভিযোগে একটি মামলা করেন।
বিছনাকান্দির পাথর নিলামের বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সাইদুল ইসলাম জানান, নিলাম প্রক্রিয়াটি বিএমডি সম্পন্ন করছে। পাথরের সঠিক দাম তারা বলতে পারবে। সিলেটে পাথরের প্রতি ঘনফুটের দাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কানাইঘাটের এক পাথর ব্যবসায়ী জানান, তিনি প্রায় দেড় লাখ ঘনফুট পাথর মজুত করেছিলেন। সরকার তা অবৈধ ঘোষণা করে জব্দ করে। কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখন নিলামে অংশ নেওয়ার কথা ভাবছেন।
- বিষয় :
- সিলেট