ঢাকা রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

‘কাজ কাম নাই, ঠান্ডাতে হাত-পাও শিষ্টা নাগছে’

‘কাজ কাম নাই, ঠান্ডাতে হাত-পাও শিষ্টা নাগছে’

শীতে জবুথবু খেটে খাওয়া মানুষ। ছবি: সমকাল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ২১:২০

‘কাজ কাম নাই, ঠান্ডাতে হাত-পাও শিষ্টা নাগছে। দুইদিন থাকি বসি আছি, আজও সকাল থাকি বসি।’- কনকনে শীতে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গার দিনমজুর ইয়াকত আলী। সংসারে দুই ছেলে মেয়ের সবাই থাকে বাইরে। প্রতিদিন যা আয় করেন, তা দিয়ে চলে সংসার।

সদর পৌরসভার একতা পাড়ার আরেক দিনমজুর ফুলজন বেওয়া বলেন, ‘একটা প্যাট হামার, মাটি না কাটলে দিন চলে না। গতকাল থাকি আজ কাজ যাবার পাই নাই। কুয়াশাত কাইয়ও কাজত আসে না।’

শুধু ইয়াকত আলী কিংবা ফুলজন বেওয়া নয়, জেলাজুড়ে এমন হাজারো দিনমজুর শীতের কষ্টে আছেন। কাজ না পেয়ে অলস সময় পার করছেন তারা। 

হিমালয়ের কোলঁ ঘেষে অবস্থিত উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম। বরাবরই এ জেলায় তুলনামূলকভাবে শীত বেশি পড়ে। বাংলা বর্ষপঞ্জির কার্তিক মাসে এ বছর জলবায়ুর প্রভাবে আগাম শীত না আসলেও পৌষের মাঝামাঝি দিনগুলোতে শীত জেঁকে বসেছে। 

গত ৩ দিন থেকে ঘন কুয়াশার কারণে দেখা মিলছে না সূর্যের। সূর্যের উত্তাপ না থাকা আর হিম বাতাসের কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে জেলাজুড়ে। সন্ধ্যার পর থেকে সকালঅব্দি বৃষ্টির মতো করে পড়ছে কুয়াশার শিশির। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা পার হলেও সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি।

কুড়িগ্রামের স্থানীয় কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, আজ জেলায় সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জেলায় শীত নিবারণের জন্য সরকারিভাবে দুঃস্থদের জন্য যে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। তবে কম্বলের চাইতে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় বেশি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে চাদর, মাফলার, জ্যাকেট এসব সরকারিভাবে দেওয়া হলে গরিব মানুষদের উপকার হবে বলেও জানান ভুক্তভুগীরা। 

রাজারহাটের রিকশাচালক শামসুল মিয়া বলেন, ‘গরম কাপড়ের অভাবে গামছা দিয়া মাথা ধাকছি, মাফলার পামো কট্টি থাকি।’

এ উপজেলার আরেক দিনমজুর শাহেরা বেগম বলেন, ‘আজ কয়দিন থাকি খুব ঠান্ডা, কম্বলের অভাবে খুব কষ্টে আছি।’

জেলার ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘১ম ও ২য় ধাপে ৯ উপজেলার জন্য ১২ হাজার কম্বল ও ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্দ চাহিদা অনুযায়ী বিতরণ কাজ চলমান।’

আরও পড়ুন

×