মাধবপুরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা

মাধবপুরে তেলিয়াপাড়া চা বাগানের লাল শাপলা লেকপাড় সমকাল
মো. আইয়ুব খান, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)
প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ | ০০:৫৯
নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক রূপের লীলাভূমি সিলেটের প্রতিটি এলাকাই পর্যটন আকর্ষণে ভরা। এরই মধ্যে এই বিভাগের বিভিন্ন এলাকা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে এখনও নতুন এমন অনেক স্থান রয়েছে যেগুলো এই তালিকায় যুক্ত হতে পারে; যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা।
সিলেটের প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা। এখানে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। মাধবপুরে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা নানা নৈসর্গিক স্থান। আছে পাহাড়, হাওর, রাবার বাগান, চা বাগান, শাহজিবাজার ফ্রুটস ভ্যালি, তেলিয়াপাড়া চা বাগানস্থ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ‘বুলেট’ এবং লাল শাপলা লেক।
মাধবপুরের এই অপার সৌন্দর্য দেখতে খুব সহজেই যে কেউ সড়ক ও রেলপথে আসতে পারেন। রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে আসতে সময় লাগে মাত্র ৩ ঘণ্টা। তবে নানা সীমাবদ্ধতা ও সরকারি বেসরকারি উদ্যোগের অভাবে মাধবপুরের এই আকর্ষণ দেশবাসীর কাছে সেভাবে পৌঁছাতে পারেনি। এতে করে এখনও সেভাবে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটেনি এই উপজেলায়। পর্যটনের বিকাশ ঘটলে সরকার ও উদ্যোক্তারা এ খাত থেকে অনেক অর্থ আয় করতে পারতেন।
পর্যটকদের জন্য হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ এবং উন্নতমানের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে মাধবপুরে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হবে।
মাধবপুর মনতলা শাহজালাল সরকারি কলেজের শিক্ষক কাউছার আহমেদ জানান, মাধবপুর উপজেলা পর্যটন শিল্পের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় এবং গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি ও শিল্পের পরই মাধবপুরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
শাহজিবাজারের প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এখানে রয়েছে হবিগঞ্জ গ্যাস ফিল্ড, ফ্রুটস ভ্যালি ও রাবার বাগান। ফ্রুটস ভ্যালিতে দেখার মতো হচ্ছে সব রকমের ফুল ও মৌসুমি দেশি-বিদেশি ফলের বাগান; যা সহজেই পর্যটকদের মন কাড়ে। প্রতি বছর শাহজিবাজার প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে এসব জায়গা অবস্থিত বলে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো এবং ভ্রমণও আনন্দদায়ক। ঢাকা-সিলেট রেললাইন পার হলেই চোখ পড়বে সবুজ গালিচার চা বাগান। দেখে মনে হবে কোনো শিল্পীর আঁকা ছবি যেন। চা বাগানের দৃশ্য যে কোনো পর্যটককে আকর্ষণ করে।
মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগানে যাওয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত। এর মধ্যে তেলিয়াপাড়া চা বাগানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান। লাল শাপলাশোভিত লেকের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত লাল বুলেট।
লাল শাপলার লেক পর্যটকদের খুব আকৃষ্ট করে। এ ছাড়া রয়েছে চৌমুহনী রাবার ড্যাম। সোনাই নদীতে রাবার ড্যামের পানিতে সাঁতার কাটতে এখানে প্রায়ই ভিড় জমায় পর্যটকরা। শাহজাহানপুরের ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন চৌধুরী জানান, মাধবপুর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এর বিকাশ ঘটলে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের ঢল নামবে। তবে সেজন্য প্রয়োজন, সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ। পর্যটকদের জন্য প্রয়োজন হোটেল, মোটেল ও নিরাপত্তা।
ইউএনও জাহিদ বিন কাসিম জানান, মাধবপুর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। প্রাকৃতিক যে নৈসর্গিক স্থান রয়েছে তা অতুলনীয়। এ উপজেলায় যাতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটে সেজন্য সরকার ও পর্যটনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- পর্যটন