যুবককে তুলে নিয়ে চোখ উপড়ে কুপিয়ে হত্যা
প্রতীকী ছবি
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬:৫৩
ফরিদপুর সদর উপজেলায় এক যুবককে তুলে নিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কানাইপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে মমতাজ ফিলিং স্টেশন থেকে তাঁকে তুলে নেওয়া হয়।
নিহত ওবায়দুর রহমান খান (৩২) কানাইপুরের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছেলে। পরিবার বলছে, তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান ওরফে খাজা ও তার বাহিনীর হাতে ওবায়দুর খুন হয়েছেন। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি আসাদুজ্জামান এ খবর নিশ্চিত করেন।
ওবায়দুরের বড় ভাই রাজীব খান বলেন, তাঁর ভাইকে খায়রুজ্জামান ও তার বাহিনী খুন করেছে। বিকেল ৪টায় মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলে তেল নিতে গেলে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে খায়রুজ্জামানের লোকজন (খাজা বাহিনী) এসে ওবায়দুরকে তুলে নেয়। তখন খাজা বাহিনীর নাজমুল, রাসেল, জাহিদ, মুরাদ, রেজাউল, নিজাম, রাশেদসহ ১২ থেকে ১৪ জন ছিল। তারা ওবায়দুরের মোটরসাইকেলটিও নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘অনেক খোঁজাখুঁজির ঘণ্টাখানেক পর জানতে পারি যে, আমার ভাইকে কে বা কারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে। ভাইয়ের চোখ খুঁচিয়ে উপড়ে ফেলছে। এক পা ভেঙে দিয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওবায়দুর মারা যান।’
রাজীব খান জানান, তাদের এক আত্মীয় ফরিদপুর পুলিশে চাকরি করতেন। সে সুবাদে ওবায়দুরের সঙ্গে পুলিশের ওঠাবসা। খাজা ও তার বাহিনী কানাইপুর এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করে আসছে। খায়রুজ্জামানকে সবাই সন্ত্রাসী হিসেবেই চিনে। তাকে গ্রেপ্তারে ওবায়দুর পুলিশকে কয়েকবার সাহায্য করেছিল। সে এখনও মাদক ব্যবসা করে। এ জন্য ওবায়দুরকে হুমকি মনে করত। রাজীব তাঁর ভাই হত্যার বিচার চান।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোছা. তাহিরা জানান, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তাঁর মাথার স্কালপে হেমাটোমা, চোখে মারাত্মক আঘাতে রক্তক্ষরণ হয়। এ ছাড়া বাম পা ভাঙাসহ শরীরে আরও আঘাত ছিল। এ জন্য উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি আসাদউজ্জামান জানান, ওবায়দুর পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন বলে তিনি শুনেছেন। এ জন্য তার ওপর হামলা হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
অভিযোগ আছে, খায়রুজ্জামান গত ২০ বছর ফরিদপুরের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা কানাইপুর ও এর আশপাশের অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলাও আছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলটির সংসদ সদস্য আবদুর রহমানের ভাগনে পরিচয়ে তিনি নানা অপকর্ম করতেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তাঁর ভাই সাবেক বিএনপি নেতা কানাইপুরের বর্তমান চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি করছে।
- বিষয় :
- ফরিদপুর