ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কুড়িগ্রামে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনপদ

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কুড়িগ্রামে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত জনপদ

কুড়িগ্রাম শহরের চৌরাস্তা মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা সমকাল

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ | ২২:০৫

উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম। তীব্র ঠান্ডায় কষ্টে রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। বিশেষ করে জেলার নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষ বেশি বিপদে পড়েছেন। এসব অঞ্চলের শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত রোগে। এরই মধ্যে গতকাল রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়।
রোববার বেলা ১১টার পর সূর্যের দেখা মিললেও দুপুর ২টার পর ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। এর সঙ্গে হিমেল বাতাসে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রোববার সকাল ৯টায় জেলায় ১০ দশমিক শূন্য ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা দেশের সর্বনিম্ন। 

আগামী দুই-এক দিনেরর মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, পরে ফের নিম্নগামী হতে পারে তাপমাত্রা।
রাজারহাটের কৃষি শ্রমিক হযরত আলী বলেন, ‘সকালে মাঠত কাম করতে অসুবিধা হয়। চাইরপাশে কুয়াশার জন্য কিছুই দেখা যায় না।’ সদরের যাত্রাপুরের চর ইয়ুথনেট এলাকার বাসিন্দা মো. সুলতান মিয়া বলছিলেন, ‘দুই দিন থাকি সূর্য দেখা গেলেও ঠান্ডা বাতাসের কারণে হাত-পাও কাঁপুনি দেয়। হামরা চরত থাকি। হামার সরকারের কোনো কম্বল এলাউ দেয় নাই।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিনের সূর্যের তাপ না থাকা ও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো করে কুয়াশা পড়ায় সমগ্র জেলায় ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। সকালে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। লোকজন দিনের বেলায়ও খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

পোড়ারচরের বাসিন্দা তাহের আলী বলেন, ছোট নাতি দু’দিন ধরে অসুস্থ। হাসপাতালে নিতে চাইলেও এই ঠান্ডায় সকালে নৌকা ছাড়ে না। নাগেশ্বরী পৌরসভার বাসিন্দা অর্পণা সরকারের ভাষ্য, সকাল থেকে ঠান্ডা বাতাস। সূর্যের তেমন তাপ নেই। ফলে ঘরে ময়লা পোশাক জমলেও ধুতে পারছেন না।
শীতজনিত রোগে রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত ডায়রিয়া বিভাগে ৬৮ জন ভর্তি হয়েছে বলে জানান কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার জুলেখা খাতুন। তিনি বলেন, শিশু বিভাগে ৮১ ও বহির্বিভাগে ২১০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক রোগী।
তীব্র শীত নিবারণের জন্য জেলায় সরকারিভাবে যে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তবে কম্বলের চেয়ে গরম কাপড় বেশি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলছেন, চাদর, মাফলার, জ্যাকেটের মতো গরম কাপড় নিম্ন আয়ের মানুষকে দেওয়া হলে তারা বেশি উপকৃত হবেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন, ৯ উপজেলায় এ পর্যন্ত ১২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। ৪৯ লাখ টাকার নতুন কম্বল কিনে বিতরণ করা হচ্ছে। মজুত থাকা ৫ হাজার কম্বল বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে।

আরও পড়ুন

×