ঢাকা বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জাবি

নারী বেশে ছাত্রী হলে ঢোকা যুবকের বিরুদ্ধে মামলা, ছাত্রীকে বহিষ্কার

নারী বেশে ছাত্রী হলে ঢোকা যুবকের বিরুদ্ধে মামলা, ছাত্রীকে বহিষ্কার

ফাইল ছবি

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ২২:০৭

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের একটি কক্ষ থেকে আটক বহিরাগত যুবক আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের এক আবাসিক ছাত্রীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) জেফরুল হাসান চৌধুরী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় অভিযুক্ত যুবক আশরাফুল ইসলাম পারভেজের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আসামি থানা হেফাজতে আছে। আগামীকাল সোমবার তাকে আদালতে চালান করে দেওয়া হবে।

অন্যদিকে, এ ঘটনায় অর্পা খন্দকারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ-২০১৮ এর ৪(১)(খ) ধারা অনুযায়ী  সাময়িক বহিষ্কার করে তাকে পরিবারের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ বি এম আজিজুর রহমান। 

এর আগে,  শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে হলে প্রবেশ করেন আশরাফুল। এ সময় তার কপালে টিপ, পরনে পালাজ্জো ও ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল। তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে হলের কয়েকজন ছাত্রীর সন্দেহ হলে বিষয়টি হল সুপারকে জানানো হয়। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অর্পা খন্দকার চাঁদনীর কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ডাবলমুরিং থানার বাসিন্দা। আটকের পর রাত পৌনে ২টার দিকে তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

হল কর্তৃপক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায়, রাত ১১টার দিকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থীর সাথে কপালে টিপ, মুখে ঘোমটা দিয়ে প্রবেশ করে ওই যুবক। এসময় তার পোশাক ও হাঁটা দেখে আশেপাশের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সন্দেহ হয়। পরে তারা হল সুপারকে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করতে বলেন। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে হল সুপারসহ ওই নারী শিক্ষার্থীর কক্ষে গিয়ে অভিযুক্ত পারভেজসহ একসাথে দেখতে পান তারা। 

নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের হল সুপার নাদিয়া সুলতানা জানান,'হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর রুমে সেই পুরুষের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আমাকে জানালে তৎক্ষনাৎ আমি হলের রুমে যাই। দরজা খোলার পর আমি তাকে খাটের উপরে বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পাই। তৎক্ষণাৎ আমি হল প্রভোস্টকে জানাই।' 

ঘটনা স্বীকার অভিযুক্ত পারভেজ বলেন,'আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিম উৎসবে বেড়াতে এসেছি। অনুষ্ঠান দেখা শেষ করে আমি কপালে টিপ পড়ে মুখ ও শরীর চাদরে মুড়িয়ে হলে প্রবেশ করি। আমরা শুধুই ভালো বন্ধু।' 

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী অর্পা খন্দকার বলেন, রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে হলে নিয়ে এসেছি। তবে আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, হল কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টরিয়াল টিমকে পাঠাই। এরপর আটক ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।' 

আরও পড়ুন

×