ছাত্র আন্দোলনে বিরোধিতা-হামলা
বেরোবির ৭১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার ‘ছেলে ভোলানো’ বলে প্রত্যাখ্যান

হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
বেরোবি সংবাদদাতা
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ | ২১:৪৫
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, ভাঙচুর এবং আবু সাঈদ হত্যায় জড়িত অভিযোগে ৭১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯তম সিন্ডিকেট সভার এ সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। তবে বেশির ভাগকে এক থেকে দুই সেমিস্টার বহিষ্কার করার এ সিদ্ধান্তকে ‘ছেলে ভোলানো’ জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ওই শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সভাপতি ড. শওকাত আলী বলেন, তথ্য অনুসন্ধান কমিটি ৭২ শিক্ষার্থীর তালিকা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়েছে। বাকি ৭১ জনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা বোর্ড ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার, ২৩ জনকে এক সেমিস্টার এবং ১৫ প্রাক্তন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পমেল বড়ুয়া, শামীম মাহাফুজ, ধনঞ্জয় কুমার টগর, গ্লোরিয়াস (ফজলে রাব্বি), বাবুল, বিধান, তানভীর, আবদুল্লাহ আল নোমান খান, রিফাত, ফারহাদ হোসেন এলিট, মোমিনুল, আরিফুজ্জামান ইমন, গাজীউর, শাহিদ হাসান ও মামুন নামে ১৫ জনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
এ ছাড়া দুই সেমিস্টার বহিষ্কার শিক্ষার্থীরা হলেন– সেজান আহমেদ, আরাফাত রহমান আবির, আবু সালেহ নাহিদ, ইমরান চৌধুরী আকাশ, কফি আনান মান্নান, মাসুদুল হাসান, উজ্জ্বল মিয়া, হাবিবুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন, শোয়াইবুল, আব্দুল্লাহ আল রায়হান, বায়েজিদ মোস্তাফী, রাসেল, সিয়াম আল নাহিদ, অমিত, আখতার হোসেন, তানজিল, মুন্না হাসান লিওন, জিহান আলী, সাব্বির হোসেন (রিয়ান), গালিব হাসান, মাহমুদুর রহমান হৃদয়, মোশারফ হোসেন, পিপাস আলী, মোজাম্মেল হক, মৃত্যুঞ্জয় রায়, সাজ্জাদ হোসেন, মানিক চন্দ্র সেন, রবীন্দ্র রায়, সিয়াম আরাফাত, সাব্বির আহমেদ, মুসান্না-বিন-আহমেদ ও শাহীন ইসলাম।
এক সেমিস্টার বহিষ্কৃতরা হলেন– হাসানুজ্জামান সৌমিক, সুদীপ্ত সরকার বাঁধন, জুবায়ের মাহমুদ, কোমল দেবনাথ, রিজন মণ্ডল, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ফিলিপ রায়, জিহাদ উল্লাহ, এস এম লাবু ইসলাম, জয়ন্ত চন্দ্র রায়, সবুজ কুমার, সবুজ মহন্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, জামাল মিয়া, তৌফিক কিবরিয়া, মেজবাহুল সরকার জয়, দেবাশীষ কুমার রায়, আতেফ আসহাব দিল মণ্ডল, নাফিউল ইসলাম, তপন চৌধুরী, সাজেদুর রহমান, আমিরুল ইসলাম শুভ ও শফিউল আযম ওরফে (সম্রাট)।
তবে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ‘নামমাত্র’ জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে এ কর্মসূচি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল ‘বিচারের নামে প্রহসন, মানি না, মানব না’, ‘ছেলে ভোলানো বিচার মানি না মানব না’, ‘প্রহসনের বিলম্ব অপরাধীর সার্টিফিকেট নিয়ে পালানো’সহ নানা প্ল্যাকার্ড।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, প্রশাসনের ভুলে গেলে চলবে না, তারা যে চেয়ারে বসে আছে তা জুলাই বিপ্লবের ফসল। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে এবং সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, এক-দুই সেমিস্টার বহিষ্কারের এই মুলা ঝুলানো শাস্তি আমরা মেনে নেব না। যাদের অনার্স শেষ হয়েছে, তারা সার্টিফিকেট তুলে নিয়ে গেছে। ওই সার্টিফিকেট তারা কার সাহায্যে তুলে নিয়ে গেছে, তা তদন্ত করে বের করতে হবে।
- বিষয় :
- বেরোবি
- জুলাই গণহত্যা