ঢাকা শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যোগাযোগে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

যোগাযোগে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

ফাইল ছবি

 কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু, মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:০০

মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর-পঞ্চবটি দ্বিতল সড়ক আধুনিকায়নের কাজ চলছে। চলতি বছর শেষ নাগাদ এর কাজ শেষ হলে খুলে যাবে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। লাঘব হবে দীর্ঘদিনের যানজটজনিত দুর্ভোগ।
আগামী ডিসেম্বরই নতুন সড়কটি চালুর আশা  করছেন প্রকল্প পরিচালক। এ লক্ষ্যে বর্তমানে দ্বিতল সড়কে ডেক্স স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। পাইল, পিয়ার ও ডেক্স প্যানেলসহ প্রকল্প জুড়েই চলছে কর্মযজ্ঞ। ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজের ৪৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে রাজধানীর সহজ যোগাযোগের জন্য পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক আধুনিকায়নে পঞ্চবটি মোড় থেকে ছয় লেনে ৩১০ মিটার করে ফতুল্লা ও নারায়ণগঞ্জ দুই দিকে প্রসারিত। পাশাপাশি পঞ্চবটি মোড় থেকে শীতলক্ষ্যা-৩ সেতুর গোলচত্বর হয়ে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত হবে চার লেন সড়ক। এর মধ্যে পঞ্চবটি থেকে চর সৈয়দপুরের শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেন সড়ক হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি দুই লেন নিচতলায়। মুক্তারপুর সেতু থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত ১০ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পথে তিন ধরনের সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হচ্ছে ৯ দশমিক ০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। নিচতলা ফ্রি হলেও দোতলা সড়কে চলাচলে লাগবে টোল।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে পাইল, পিয়ার ও ডেক্স প্যানেলসহ প্রকল্প জুড়েই কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে। ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা তীরে এখনই ফুটে উঠেছে দ্বিতল সড়কের রূপরেখা। প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার পর যানজট এড়িয়ে এই সড়কে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে। তবে এই সড়কের পঞ্চবটি থেকে পোস্তগোলা এবং শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে প্রশস্ত সড়ক করা গেলে সড়কটির গুরুত্ব আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুলাহ আল মাসুম। তিনি জানান, দিনের বেশির ভাগ সময় এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে। যানজটের কারণে প্রতিদিন অফিসে যেতে দেরি হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা। তাই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর হবে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই রুটে যানবাহনের গতি বাড়বে প্রায় পাঁচ গুণ। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জের পর ইন্টারসেকশন সংবলিত দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের এই পঞ্চবটিতে।
মুক্তারপুর-পঞ্চবটি সড়ক প্রশস্ত ও দোতলাকরণ প্রকল্পের ডেপুটি টিম লিডার প্রকৌশলী জহুরুল হক জানান, এখন যে গতিতে কাজ চলছে, সেটি বজায় থাকলে আশা করা যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরে কাজটি শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের লাখ লাখ মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে। তাই দ্রুত গতিতে চলছে কর্মযজ্ঞ।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজের ৪৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
২০১৮ সালে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত ষষ্ঠ বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এর সংযোগ রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক। এটি খুব সংকীর্ণ ও আঁকাবাঁকা। এর গড় প্রশস্ততা ৫.৫ মিটার। এ রাস্তার উভয় পাশে বিভিন্ন ব্যবসার প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি থাকায় প্রায়ই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা বিবেচনা করে পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দ্বিতল রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রকল্পটি জিওবি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
 

আরও পড়ুন

×