ডাকাতির অভিযোগে ব্যবসায়ীকে চোখ উপড়ে পিটিয়ে হত্যা

ফরিদপুর অফিস
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬:৩২
ফরিদপুর সদরের আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে মিরান খান (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে ডাকাতির অভিযোগে চোখ উপড়ে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সদরের গুচ্ছগ্রাম এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত মিরান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পদ্মার চরের বালু, মাছ ও ইন্টারনেট ব্যবসার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
মিরান খান আলিয়াবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সাদীপুর সেতুর পাশের জালাল খানের ছেলে। তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
স্থানীয়দের দাবি, মিরান ডাকাতি ও মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অস্ত্র নিয়ে ডাকাতি করতে গেলে গণপিটুনিতে মিরানের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি এয়ারগান ও একটি ছ্যানদা উদ্ধার দেখিয়েছে এলাকাবাসী।
মিরানের ছোট ভাই ইরান খান বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিন মাস আগে মাছ ধরা নিয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যক্তি তন্ময়ের সঙ্গে আমার ভাইয়ের দ্বন্দ্ব হয়। সেসময় থানায় জিডি করেছিলাম। তারাই আমার ভাইকে হত্যা করেছে।
ইরান আরও বলেন, যেখানে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে সেখানে আমাদের একটি ঘর আছে। ডাকাতির যে কথা বলছে তা মিথ্যা। আমার ভাই ব্যবসা করতো, আমরা যথেষ্ট সচ্ছল। আর যেই গ্রামে ডাকাতির কথা বলা হয়েছে সেটি একটি গুচ্ছগ্রাম, সবাই অতি দরিদ্র। কারও ঘরে দুই হাজার টাকা পাওয়া যাবে না। মূলত প্রভাব বিস্তার ও মাছ ব্যবসা নিয়ে আমার ভাইয়ের সঙ্গে প্রভাবশালীদের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। তার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। রাত ১২টার দিকে আমরা খবর পাই, আমার ভাইকে মারা হচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেও নদীর ওপার যেতে পারিনি। ঘাটে কোনও নৌকা রাখেনি তারা। এমনকি ভোরে গিয়ে আমার ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তারা বাধা দেয়।
এলাকার বাসিন্দা মনি শিকদার বলেন, রাতে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তবে কুয়াশার কারণে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। ভোরের দিকে মিরান খানের আত্মীয়স্বজন এসে আহত অবস্থায় তাকে নিয়ে গেছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ওয়ার্ড মাস্টার ফায়েকুজ্জামান জানান, শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে মিরানকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর কিছুক্ষণ পরে তার মৃত্যু হয়।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, এলাকাবাসীর পিটুনিতে এক ব্যক্তি আহত হন। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণের পর তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
- বিষয় :
- হত্যা