পাল্টাপাল্টি মামলায় উত্তপ্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

.
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:৫৪ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ১০:০৪
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকার জেরে পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনা ঘটছে। গত পাঁচ দিনে বন্দর থানায় এ রকম অন্তত দুটি মামলা হয়। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মামলায় এক পক্ষে রয়েছেন ছাত্র সমন্বয়করা, অন্য পক্ষে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক। গতকাল শনিবারও এ নিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে ২৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন ববির নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ। অভিযুক্তদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগ কর্মী। তাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে ২১ জানুয়ারি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুম্মন হোসেন। মামলায় অভিযুক্ত ১৫ জনের মধ্যে কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়কও আছেন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ১২তম ব্যাচের আইন বিভাগের ছাত্র নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী শাহরিয়ার সানকে মারধর করে কক্ষে আটকে রাখেন প্রতিপক্ষের শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে সানের সহপাঠীরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন এবং ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা প্রক্টরের কাছে গিয়ে কৈফিয়ত চান– ৫ আগস্টের আগে হামলার জন্য কেন মামলা হয়নি। পরে চাপের মুখে গভীর রাতে ববি নিরাপত্তা কর্মকর্তা ২৪ শিক্ষার্থীকে আসামি করে বন্দর থানায় অভিযোগ দেন।
এর আগে রুম্মান হোসেন ৫ আগস্টের পর হামলা হয়েছে অভিযোগে মামলা করেন। রুম্মান হোসেন বলেন, পুলিশ তাঁর মামলা এজাহার হিসেবে নিয়েছে। সমন্বয়করা বন্দর থানার গিয়ে ওসির সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তাঁকেও (রুম্মান) হুমকি দিয়েছেন। তিনি নিরাপত্তার অভাবে প্রক্টরকে অবহিত করে বাড়ি চলে যাচ্ছেন।
রুম্মনের মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তমাল বলেন, শুক্রবার এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করেন সাধারণ ছাত্ররা। তাকে ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পর তারা প্রক্টরকে মামলার জন্য চাপ দেন। মামলায় অভিযুক্ত ২৪ জনের বেশির ভাগই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী। ৫ আগস্টের আগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছিল। তারা থানায় গিয়েছিলেন মামলার তথ্য জানতে। ওসির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কথা মিথ্যা।
বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ববি কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাতে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। এটি এজাহার হিসেবে নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। রুম্মানের মামলাটি তদান্তধীন।
এ বিষয়ে ববি ভিসি অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। প্রক্টর ড. এটিএম রফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রো ভিসি অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, শুক্রবার এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সমন্বয়করা প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলেন। ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগ ছিল ২৪ জনের বিরুদ্ধে। রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিলে তিনি একটি মামলা করেছেন।
তবে ববি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজা শরীফের দাবি, জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে রুম্মান বিরোধিতাই করেননি, তাঁকে ৫ আগস্ট বিকেলে পেটানো হয়েছিল।
- বিষয় :
- মামলা