থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে হেনস্তার শিকার

রাজিবপুর থানা। ফাইল ছবি
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৯:০৯ | আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৯:৩৭
কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে এক ব্যক্তি হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিমের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর দাবি, চর রাজিবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান তাঁকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। জমি-সংক্রান্ত একটি মামলার বাদী রেফাজউদ্দিনের কাছে টাকা নিয়ে এসআই এ ঘটনা ঘটান বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সমকালের হাতে আসা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, এসআই আসাদুজ্জামান এবং এক পুলিশ সদস্য সাধারণ পোশাক পরিহিত অবস্থায় থানা গেটের সামনে রেজাউল করিমকে কোমরের বেল্ট ধরে টেনেহিঁচড়ে থানার ভেতরে নিয়ে যাচ্ছেন।
রেজাউল করিম উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের চাইর উদ্দিন মেম্বারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, রেফাজউদ্দিনের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছে। দু’দিন আগে এসিল্যান্ড বিষয়টি তদন্ত করেন। তার পর পরামর্শ দেন থানায় অভিযোগ দিতে। আমি সকালে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে এসআই আসাদুজ্জামান আমাকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে মারধর করে গারদে আটকে রাখেন। আমাকে হত্যা মামলার আসামি করবে হুমকি দেন। পরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।’
প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা বলেন, রেজাউল ভাই থানায় অভিযোগ দিতে গেলে আসাদুজ্জামানসহ আরেকজন তাঁকে জোর করে ধরে নিয়ে যায়। মামলার আসামি করার হুমকি দেয়।
জানতে চাইলে এসআই আসাদুজ্জামান ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, জমিজমা বিষয়ে কোর্টে একটি মামলা আছে। এসিল্যান্ড তদন্ত করছেন বলে থানায় অবগত করার পর মূলত সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাকে টানাহেঁচড়া করা হয়নি।
আপনি কি মামলার তদন্তের দায়িত্বে– এমন প্রশ্নের উত্তরে এই এসআই বলেন, ‘না, আমি দায়িত্বে নাই। অন্য মামলার তদন্তে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’
চর রাজিবপুর থানার ওসি তসলিম উদ্দিন বলেন, ২০১৩ সালে জামায়াতের অফিস ভাঙচুরের একটি মামলায় রেজাউলের বাবা তাহের আলীকে আসামি করা হয়েছে। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। তাঁর বিষয়ে জানতে ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
রেজাউল করিমের বাবা তাহের আলী বলেন, ‘আমার নামে কোনো মামলা নাই। পুলিশ মিথ্যা বলছে।’
উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল বাশার মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, গত রাতে আমরা অফিস ভাঙচুরে বিষয়ে একটি মামলা করেছি থানায়। কোদালকাটির আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিমকে আমি চিনি না। মামলার আসামি কিনা, আমি জানি না।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।