স্কুলের সভাপতি পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব, অভিভাবক সদস্যকে হত্যা

প্রতীকী ছবি
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২১:২৩
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক সদস্যকে ফালা মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত হারেজ আলী (৪০) চরমোচারিয়া ইউনিয়নের হরিনধরা গ্রামের শরাফত আলীর ছেলে। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
জানা গেছে, ৮-৯ মাস আগে হরিণধরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি করা হয়। আহ্বায়ক হন শফিকুল ইসলাম মুক্তা নামে এক ব্যক্তি। তবে এ কমিটি মেনে নেয়নি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ছামেদুল ইসলাম ও মো. আলী। তারা কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আদালত আপিল মঞ্জুর করেন এবং কমিটির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন। শফিকুল ইসলাম মুক্তা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিট করেন। এ নিয়ে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
শনিবার দুপুরে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ওরফে বাবুল ও এডহক কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মুক্তা বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভা আহ্বান করেন। এ সময় সভায় উপস্থিত হন অভিভাবক সদস্য হারেজ আলী। বেআইনি সভা বলে প্রতিবাদ করেন তিনি। এ সময় বাগবিতণ্ডা শুরু হলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান নেওয়া দু’পক্ষই উত্তেজিত হয়ে ওঠে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
অভিযোগ রয়েছে– সংঘর্ষ চলাকালে হঠাৎ প্রধান শিক্ষক ও কমিটি সভাপতির নেতৃত্বে একদল লোক হারেজ আলীর ওপর হামলা চালায়। এসময় দুই ব্যক্তি ধারালো ফালা দিয়ে হারেজ আলীর পেটে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। তাকে উদ্ধার করে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সেখানে নেওয়ার পথেই মারা যান হারেজ আলী।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, হারেজের মৃত্যুর খবর চাউর হলে লোকজন লাঠি, ফালা নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধ লোকজনকে শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় রাত পর্যন্ত যৌথ বাহিনী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে আটক করেন।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ছামেদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর ভাষ্য– পরিকল্পিতভাবে মুক্তা ও রফিকুল মিলে হারেজকে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।
এদিকে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ওরফে বাবুল ও এডহক কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মুক্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হত্যার ঘটনায় ৫জনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।