সুনামগঞ্জে বিপদসীমার উপরে নদীর পানি, বন্যার শঙ্কা
পানিতে ডুবে গেছে অনেক এলাকা
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২০ | ২৩:২৩ | আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ | ০৩:৫৪
সুনামগঞ্জে নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজানে অর্থাৎ ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতে গত ৭২ ঘণ্টায় অস্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি শনিবার সকালে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার এবং পাহাড়ী নদী যাদুকাটার পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শহরের পাশ দিয়ে যাওয়া সুরমা ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা সীমান্তবর্তী পাহাড়ি নদীগুলোর পানি কূল উপচে প্রত্যন্ত এলাকায় প্রবেশ করায় নদী তীরবর্তী এলাকা ও জেলার সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর এবং তাহিরপুরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর, কাজীর পয়েন্ট, উত্তর আরপিননগর, তেঘরিয়া ও বড়পাড়া এলাকার চলাচলের সড়ক এবং কিছু নিচু ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে।
এদিকে, ভারত থেকে নেমে আসা পিয়াইন ও চেলা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার ছাতকের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর কূল উপচে ছাতক শহর, নোয়ারাই, ছৈলা আফজলাবাদ, জাউয়াবাজার ইউনিয়নসহ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ভারতের মেঘালয়- চেরাপুঞ্জিতে গত ৭২ ঘণ্টায় ৯০২ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি এবং এর আগের ৭২ ঘণ্টায় ২৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এ কারণে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা ৭ দশমিক ৮ অতিক্রম করে ৮ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার এবং পাহাড়ি নদী যাদুকাটার পানি বিপদসীমা ৮ দশমিক ৫ অতিক্রম করে ৮ দশমিক ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।