ঝরে পড়ছে আমের গুটি বিপর্যয়ের শঙ্কা

খরায় ঝরে যাচ্ছে আমের গুটি। ছবি: সমকাল
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ | ০২:৪২
লালপুরের ওয়ালিয়া গ্রামের আশফিকুল ইসলাম আড়াই বিঘা জমিতে হাঁড়িভাঙ্গা জাতের আমের বাগান করেছেন। মুকল আসার আগে পরিচর্যাও করেছিলেন। এর পরও বাগানের ৫ থেকে ১০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। খরা ও পোকার কারণে সে গুটিগুলোও ঝরে যাচ্ছে। কীটনাশক ও পানি দিয়ে গুটি ঝরা রোধ করা যাচ্ছে না। তিনি ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
আশফিকুল ইসলাম বলেন, দুই বছর ধরে আমে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এবার বাগানে আমই নেই। গুটি ঝরে যাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যাবে না। সব বাগানেরই একই অবস্থা।
আম চাষি সোহেল রানার দুই বিঘাজুড়ে আমের বাগান। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে আম চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে। অনেকেই বাগান কেটে ফেলছেন।
ব্যবসায়ী ইনছার আলী এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমের ব্যবসা করেন। বিভিন্ন জাতের কয়েক বিঘা আমের বাগান কিনেছেন। বেশির ভাগ গাছে মুকুল আসেনি। গুটি ঝরে পড়েছে অনেক গাছের। কীটনাশক ও পানি সেচ দিয়েও গুটি রক্ষা করা যাচ্ছে না। এবারও লোকসান হবে।
নাটোরের লালপুরে এ সময় থোকায় থোকায় সবুজ আমের গুটিতে ছেয়ে যায় বাগান। কিন্তু এবার মুকুল কম এসেছে। যেটুকু মুকুল এসেছে, তা তীব্র তাপপ্রবাহ, খরা ও পোকার উপদ্রবে ঝরে পড়ছে। কীটনাশক ও পানি সেচ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না। এবার আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি ছাড়া আমের গুটি ঝরা বন্ধ হবে না– বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১ হাজার ৮০০ ৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের বাগান আছে। ৬২ শতাংশ বাগানে আমের মুকুল এসেছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার টন। যার বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ৬৩ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গুটি ঝরে যাওয়ায় আমের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় সমকালকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর মুকুল কম এসেছে। তার ওপর চৈত্র মাসেও দিনে খরা, ভোরে কুয়াশা ও পোকার উপদ্রবে কিছু গাছে গুটি ঝরছে। বড় ধরনের দুর্যোগ না হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এবার আমের বাজারও গত বছরের তুলনায় বাড়বে বলে আশা করছেন
এ কর্মকর্তা।
- বিষয় :
- নাটোর