ঢাকা বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

জমি দখলের প্রতিবাদ করায় মামলা-হয়রানি

জমি দখলের প্রতিবাদ করায় মামলা-হয়রানি

আবাসন কোম্পানির হয়রানির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে গ্রামবাসী। শুক্রবার কালিয়াকৈরের মৌচাক-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কে সমকাল

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | ০১:০১

কালিয়াকৈরের বাহেরচালা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। কয়েক বছর ধরে তাঁর গ্রামের লোকজন অভিযোগ করছে, ভেনিস অব বেঙ্গল প্রোপার্টিজের স্বপ্নপুরী আবাসন প্রকল্পের নামে তাদের জমি দখল করা হচ্ছে। এসবের প্রতিবাদ করেন আব্দুর রহমানও। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগে কালিয়াকৈর থানায় চাঁদাবাজির মামলা দেওয়া হয়। গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আব্দুর রহমান। 
গতকাল শুক্রবার উপজেলার পাঁচ শতাধিক গ্রামবাসী মৌচাক-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। সেখানে বক্তব্য দিতে এসে এসব কথা বলেন আব্দুর রহমান। 
অন্য বক্তারা অভিযোগ করেন, ভেনিস অব বেঙ্গল প্রোপার্টিজের মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাহেরচালার এক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক 
শতাংশ জমি কিনে দখলে নেন। পরে ওই জমির আশপাশের জমি অল্প দামে কেনার পাঁয়তারা 
শুরু করে কোম্পানিটি। এতে ব্যর্থ হয়ে জোর 
করে পছন্দের জমি দখল করে নেয়। এর প্রতিবাদ করা হলে একজনের নামে দুটি চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে। 
বক্তব্য দিতে গিয়ে ভুক্তভোগী মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল আলীম বলেন, ভেনিস অব বেঙ্গল প্রোপার্টিজের লোকজন জোর করে খাইলসাজানি মৌজার ১১০ শতাংশ জমি দখল করে মাটি ভরাট করেছে। এর প্রতিবাদ করায় গত মার্চে কালিয়াকৈর থানায় সাতজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছে। এতে তাঁকে আসামি করা হয়। তারা ওই কোম্পানির লোকজনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ।
শুক্রবারের মানববন্ধনে এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও দখল করা জমি ফেরতের দাবি জানানো হয়। এ সময় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ আঞ্চলিক সড়কটি ঘণ্টাখানেক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে সড়কের দুই পাশে যানজট দেখা দেয়। 
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন তোফাজ্জল হোসেন, তাহের আলী, নুসরাত জাহান, হাজী আব্দুর রহিম প্রমুখ। বাহেরচালার বাসিন্দা আলমাছ মিয়া বলেন, তিনি পেশায় কৃষক। কোম্পানিটি  তাঁরসহ অংশীদারদের প্রায় ১৬০ শতাংশ জমি নিয়ে গেছে। আলমাছের ভাষ্য, ‘দাম চাইতে গেলে মারতে আসে। তারা টাকাও দেয় না, জমিতে ফসল চাষ করতেও দেয় না। আমরা গরিব কৃষক, কী করব বুঝতে পারছি না।’ 
জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেন স্বপ্নপুরী আবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আব্দুস সামাদ। তাঁর দাবি, ‘আমরা কারও জমি দখল করি নাই। আমাদের দখলে যে জমি রয়েছে, তা গ্রামবাসীর কাছ থেকে কেনা। গ্রামবাসীর নামে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন কোম্পানির মালিক, তা আমার অজ্ঞাতসারে করেছেন। আমি মামলা-হামলার পক্ষে নই।’
কালিয়াকৈর থানার ওসি মো. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ওই গ্রামের সাতজনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলার তথ্য জানেন। সেটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন।

আরও পড়ুন

×