ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

রাবির ফোকলোর বিভাগের নাম সংস্কারসহ তিন দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, অনশন

রাবির ফোকলোর বিভাগের নাম সংস্কারসহ তিন দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন, অনশন

সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে ফোকলোর বিভাগের সামনে অনশন কর্মসূচি

রাবি প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫ | ১৬:৫৭

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের নাম সংস্কারসহ তিন দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে ফোকলোর বিভাগের সামনে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। বিকেল ৩টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। 

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির প্রথমটি হলো- ফোকলোর বিভাগের নাম পরিবর্ধন বা সংস্কার করতে হবে, যাতে বিষয়টির স্বীকৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। দ্বিতীয় দাবি- পিএসসি ও ইউজিসিতে ফোকলোর বিষয়ের নাম সংযুক্ত করে কোড প্রদান নিশ্চিত করতে বিভাগীয় উদ্যোগ নিতে হবে। তুতীয় দাবিটি হলো- পরীক্ষার ফলাফল এক মাসের মধ্যে প্রকাশ এবং নির্ধারিত সময়ে ক্লাস রুটিন প্রকাশ করতে হবে।

অনশন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘এই মুহূর্তে দরকার, ফোকলোর বিভাগ সংস্কার’, ‘আমাদের দাবি-আমাদের দাবি, মানতে হবে-মানতে হবে’, ‘সিন্ডিকেট না মুক্তি, মুক্তি মুক্তি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন ও স্লোগান দেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফোকলোর বিভাগ সংস্কারের দাবিতে তারা তিন দফা দাবি জানিয়েছিলেন। শিক্ষকেরা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করার বদলে বিভিন্ন ছলচাতুরি করছেন। এজন্য তারা আজ অনশনে বসেছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার শুভ বলেন, ফোকলোর একটি বহুমাত্রিক বিষয়ভিত্তিক বিভাগ, যেখানে আমরা শুধুমাত্র লোককাহিনী বা গান-নৃত্য নয়, বরং সমাজ, উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও সংস্কৃতির সমন্বিত পাঠ গ্রহণ করে থাকি। আমাদের পাঠ্যক্রমটি আধুনিক, প্রাসঙ্গিক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চাহিদা পূরণে সক্ষম। তবে অনেকেই বিভাগের পরিধি ও গুরুত্ব বুঝতে পারে না। অনেকেই মনে করে- এটি শুধু পুরনো গান, নাচ বা লোকগল্পের পড়াশোনা, যা বাস্তব জীবনের কাজে লাগবে না। চাকরিক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীরা হীনমন্যতায় ভোগেন। শুধুমাত্র এই নামের কারণে আমরা অবহেলিত হচ্ছি।’

বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী নিলয় দে বলেন, বিভাগের শিক্ষকরা বলছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু কবে আমাদের আন্দোলনের ফলাফল পাব সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। আমরা কালক্ষেপণ নয় দ্রুত অফিশিয়াল সিদ্ধান্ত চাই। আমরা আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ মে একটি উপ-কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাবনা পেশ করবে। ইতোমধ্যে সেই কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছে। তাদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরাও একমত। তবুও তারা আজ কেন আন্দোলন করছে, বুঝতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে, দাবিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নিতে হবে। কিন্তু সেটি তো সম্ভব না।’

আরও পড়ুন

×