ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

অর্ধশতাধিক স্থাপনা নদীতে ভাঙনের ঝুঁকিতে সেতু

অর্ধশতাধিক স্থাপনা নদীতে ভাঙনের ঝুঁকিতে সেতু

বকশীগঞ্জের মুন্দীপাড়া সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়ক ধসে গেছে। ছবি: সমকাল

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫ | ০৪:৪৩

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় অসময়ে দশানী নদীর পানির বাড়ছে। এতে ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে দিশেহারা নদীপারের মানুষ। কয়েকদিনের মধ্যে একটি মসজিদ, বাড়ি, বাজারসহ অর্ধশতাধিক স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।

ভাঙনের ফলে উপজেলার মুন্দিপাড়া সেতুর পূর্ব পাশের অ্যাপ্রোচ সড়ক ধসে পড়েছে। এতে দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতুটি। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন দুই উপজেলার হাজারো মানুষ। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয়রা বলছেন, কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বেড়েছে দশানী নদীর পানি। এ সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাঙন। প্রতিদিন ভাঙছে বসতভিটা, রাস্তাঘাট-ফসলি জমি। ইতোমধ্যে মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

মেরুরচর ইউনিয়নের মুন্দিপাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ মিয়া, সুন্দর আলী, জুয়েল মিয়া, সেমাজুল হক, শিক্কু মিয়া, লুৎফর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সাজু মিয়া, কালামত আলী, আমিরুল ইসলামসহ অনেক পরিবার ভাঙনের কবলে পড়েছে। ঘুঘরাকান্দি এলাকার ফকির আলী, গামা শেখ, হাসেম আলী, মকবুল শেখ, ফরিদ, ওমান মিয়া, ইসরাফিল ও আলামিন, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইড়মারী এলাকার হেকমত আলীসহ অর্ধশতাধিক পরিবার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়া ঘুঘরাকান্দি বাজার ও একটি মসজিদ ভেঙে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা স্থানে বসবাস করছে অনেক পরিবার। ঝুঁকিতে রয়েছে আরও পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর। আতঙ্কিত হয়ে অনেকে ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি। অনেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে যান মেরুরচর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ মিয়া, সুন্দর আলী, জুয়েল মিয়া ও সেমাজুল হকের ভাষ্য, কয়েকবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন তারা। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ দরিদ্র কৃষক। 

ঘুঘরাকান্দি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ফকির আলী, গামা শেখ, হাসেম আলী ও মকবুল শেখ জানান, তাদের সবাই কমবেশি ভাঙনের শিকার হয়েছেন। সহায়-সম্বল বলতে যা ছিল, সব শেষ হয়ে গেছে। ফসলি জমিও নদীতে চলে যাচ্ছে। 

বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে জানিয়ে মেরুরচর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, সেতুর অ্যাপ্রোচ সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে ভোগান্তির শিকার না হন, সেজন্য সেতুর পাশেই একটি সাঁকোর ব্যবস্থা করা হবে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

আরও পড়ুন

×