সুজানগরে আ'লীগের দু'পক্ষে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১৪

রোববার পাবনার সুজানগরে আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষে আহতদের কয়েকজন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন- সমকাল
পাবনা অফিস ও সুজানগর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১২:০৫ | আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১২:০৮
পাবনার সুজানগর উপজেলার আমিনপুর থানার রানীনগর গ্রামে মাছ ধরা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার এ ঘটনায় ১৪ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেনসহ পাঁচজনকে আটক করেছে। আটক অন্যরা হলেন সাইদুল, শরীফুল, আরিফ ও দোলোয়ার।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রানীনগর ইউনিয়নের ভাদুরজলা বিল নিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান মাস্টার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুল ইসলাম মাস্টারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি আদালত খায়রুল মাস্টার গ্রুপের পক্ষে রায় দেন। রোববার বেলা ২টার দিকে খায়রুলের লোকজন ওই বিলে মাছ ধরছিল। এ সময় শাহিনুর ও তার বাবা রানীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেনের নেতৃত্বে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। শাহাদত ও শাহিনুর মাস্টার তাদের লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে খায়রুলের ১৪ সমর্থক গুলিবিদ্ধ হন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে আরও ৮ জন আহত হন। এরপর খায়রুলের লোকজন শাহাদতের বাড়িসহ আশপাশের কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে।
গুলিবিদ্ধদের মধ্যে রয়েছেন ভাটিকয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাকিব, শাহাদত হোসেনের ছেলে রাজিব খান, মৃত মানিকের ছেলে উজ্জ্বল, আবদুল বাতেনের ছেলে রায়হান, হোসেনের ছেলে জিন্নাহ সর্দার, হাসেন আলীর ছেলে সেলিম, শাহিন ও শাকিব, ইব্রাহিমের ছেলে রফিকুল, মৃত ইদ্রিসের ছেলে রাশু মেম্বার, আব্দুল মতিনের ছেলে পেয়ারা, মৃত হাকিমের ছেলে আমজেদ, সিদ্দিক খানের ছেলে আমির। আহতদের মধ্যে ১৪ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, শাহাদত হোসেন ও শাহিনুর মাস্টার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবদুল ওহাবের গ্রুপের এবং খায়রুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহিন গ্রুপের সমর্থক।
রানীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম তৌফিকুল আলম জানান, প্রায় এক মাস আগে সালিশ বৈঠকে রানীনগর গ্রামের জামাল শেখের ছেলে সবুজের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। সবুজের দুই ছেলে রয়েছে। সালিশের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছোট ছেলে মায়ের কাছে এবং বড় ছেলে বাবার কাছে থাকবে। এ বিষয়ে রানীনগর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান মাস্টার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুল ইসলাম মাস্টার পৃথক পক্ষ নেন। এ ছাড়া একটি জলাশয় নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল।
তবে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান মাস্টার বলেন, বাড়িতে এসে খায়রুলের নেতৃত্বে তার পক্ষের লোকজন ভাঙচুর শুরু করলে বাবা আত্মরক্ষায় তার লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে গুলি চালান।
সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহিন সমকালকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওহাব গ্রুপের লোকজন আমার গ্রুপের ১৪ জনকে গুলি করেছে। তারা এখন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র আবদুল ওহাব তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ
অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি অরাজনৈতিক ও স্থানীয়। আমিনপুর থানার ওসি
মোজাম্মেল হক জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
- বিষয় :
- পাবনা
- সুজানগর
- আওয়ামী লীগ
- সংঘর্ষ
- গোলাগুলি