স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেউই
করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ হারাচ্ছেন খুলনার মানুষ

ফাইল ছবি
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২০ | ০৬:২৫
করোনা সংক্রমণের ভয় কেটে যাচ্ছে খুলনার মানুষের। জ্বর-সর্দি বা কাশি হলেই কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য ছুটছে না কেউ। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) আইসিইউ ভবনে স্থাপিত কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রটি এখন ফাঁকা পড়ে থাকে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও কমে গেছে অনেক।
এদিকে করোনা রোগী কমার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা বেড়েছে খুলনার মানুষের। ঘরের বাইরে, জনবহুল স্থান এমনি কর্মস্থলেও মাস্ক পরছেন না বেশিরভাগ মানুষ। বাস, আটোরিকশা, সিএনজি, ইজিবাইকসহ সকল গণপরিবহনে মাস্ক ছাড়া গা ঘেঁষে যাতায়াত নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নগরীর প্রতিটি শপিং মল বা মার্কেটগুলোতেও একই অবস্থা।
খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ এপ্রিল খুমেক হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব চালু করা হয়। ওই মাসেই পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৭২৯টি নমুনা। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয় ২৩ জন এবং নেগেটিভ আসে ১ হাজার ৭০৬ জনের। মে মাসে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৪ হাজার ৭৮২টি। এর মধ্যে পজিটিভ হয় ১৭৭টি এবং নেগেটিভ আসে ৪ হাজার ৬০৫টি। জুন মাসে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৭ হাজার ৯৪১টি। এর মধ্যে পজিটিভ আসে ২ হাজার ২১২টি এবং নেগেটিভ হয় ৫ হাজার ৭২৯টি। খুলনা পিসিআর ল্যাবে সব থেকে বেশি করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয় জুলাই মাসে। এ মাসে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৮ হাজার ৫৪২টি। এর মধ্যে পজিটিভ হয় ২ হাজার ৮৫৭টি এবং নেগেটিভ হয় ৫ হাজার ৬৮৫টি।
আগস্ট মাস থেকে কমতে শুরু করে নমুনা পরীক্ষার হার। আগস্ট মাসে পরীক্ষা করা হয় ৭ হাজার ৯৮২টি নমুনা। এর মধ্যে পজিটিভ আসে ২ হাজার ৩৪২টি এবং নেগেটিভ আসে ৫ হাজার ৬৪০টি। সেপ্টেম্বর মাসে নমুনা পরীক্ষার হার আরও কমে দাঁড়ায় ৭ হাজার ১৩১ টি। এর মধ্যে পজিটিভ আসে ৯০৬টি এবং নেগেটিভ হয় ৬ হাজার ২২৫টি।
সূত্র জানায়, অক্টোবর মাসে ৯ তারিখ পর্যন্ত এক হাজার নমুনাও পরীক্ষা করা হয়নি। অর্থ্যাৎ, অক্টোবর মাসে নমুনা পরীক্ষা আরও কমে যাবে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণভীতি কমার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট কয়েকটি কারণে পরীক্ষা কমে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইতোপূর্বে দীর্ঘ লাইনে থেকেও পরীক্ষা করতে না পারা, ফল পেতে দেরি হওয়া, পজিটিভ-নেগেটিভ বাণিজ্যসহ নানা রকম হয়রানি অন্যতম। এ ছাড়া করোনা পরীক্ষায় নির্ধারিত ফি দিতে অপারগ হচ্ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, সুস্থতার হার বাড়ছে বলে করোনা পরীক্ষার হার কমে গেছে। তবে সচেতনতামূলক কাজ চলমান আছে।
খুমেকের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদি নেওয়াজ বলেন, ভয় কেটে যাওয়ার কারণে মানুষ আগের মতো নমুনা দিতে আসছেন না। এটা উদ্বেগের বিষয়। উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করাতে প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।