শোভনদণ্ডীতে বিলের মাঝে দুই সেতু

আহমদ উল্লাহ, পটিয়া
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২০ | ২৩:১১
বিস্তীর্ণ বিল। আশপাশে লোকালয় নেই, তাই মানুষের চলাচলও নেই। সেতু দিয়ে চলার জন্য দুই পাশে নেই সড়কও। তবু পটিয়ার শোভনদণ্ডী গ্রামে বিলের মাঝে ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি সেতু নির্মাণের কারণ বুঝতে পারছেন না স্থানীয়রা। অবশ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতু যখন হয়েছে শিগগিরই সড়কও হবে। সেখানেও স্থানীয়দের প্রশ্ন, সড়ক তৈরির আগে সেতু কেন?
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিলের মাঝে অপ্রয়োজনীয় সেতু দুটি নির্মাণ করা হয়েছে ব্যক্তি বিশেষকে খুশি করার জন্য।
এটা সরকারি টাকার অপচয়। সেতু এলাকায় কেবল কৃষক ও কৃষিশ্রমিকরা মাঠে যাওয়া-আসা করেন জমির আইল দিয়ে, তাই সেখানে এই মুহূর্তে সেতুর কোনো দরকার ছিল না।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উপজেলার শোভনদণ্ডী ইউনিয়নের শোশাং এলাকায় প্রায় ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু দুটি নির্মাণ করা হয়। দরপত্রে আরফা করিম উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে একটি ও হিলচিয়া এলাকায় একটি সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে। কিন্তু আরফা করিম উচ্চ বিদ্যালয় এলাকার সেতু নির্মাণ না করে তা হিলচিয়া শোশাং সংযোগ সড়ক এলাকায় করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন পটিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। সংযোগ সড়ক ছাড়া সেতু নির্মাণ করায় জনগণ ক্ষোভ ও অসস্তোষ প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে সেতু এলাকায় ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ বছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় পটিয়া উপজেলার শোভনদণ্ডীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩৬টি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু করে। এর মধ্যে শোভনদণ্ডী, কেলিশহর, জিরি, দক্ষিণ ভূর্ষি, ধলঘাট, বড়লিয়া, কচুয়াই, হাইদগাঁও, কুসুমপুরা, খরনা, ভাটিখাইন, ছনহরায় সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে। শোভনদণ্ডীতে লোকালয়বিহীন ও সড়কের অস্থিত্ব নেই এমন জায়গায় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। উল্লিখিত স্থানে সেতু নির্মাণ না করে ব্যক্তি বিশেষকে খুশি করার জন্য অপ্রয়োজনীয় জায়গায় করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুপ্তশ্রী সাহাকে জানানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর খালেদ জানিয়েছেন, সেতু এলাকায় বর্তমানে মাটির রাস্তা রয়েছে। উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু গ্রামীণ সড়কে যেখানে অতি প্রয়োজন সেখানে সেতু তৈরি না করে বিলের মাঝে যেখানে চলাচলের সড়ক নেই, সেখানে সেতু তৈরির কারণ কী? এমন প্রশ্নে তিনি নিরুত্তর থাকেন।
শোভনদণ্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসানুল হক বলেন, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি শোভনদণ্ডী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। হিলচিয়া শোশাং সংযোগ সড়কে যেহেতু সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, সেহেতু শিগগিরই সড়কও নির্মাণ করা হবে।'
- বিষয় :
- বিলের মাঝে সেতু
- সংযোগ সড়ক
- সংযোগবিহীন সেতু