ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

সমুদ্রে মাছ ধরার ট্রলার বিস্ফোরণ

দগ্ধ আরেক জেলের মৃত্যু, ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

দগ্ধ আরেক জেলের মৃত্যু, ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২১ | ০৪:১৯

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ আরেক জেলের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মেহেরাজ হোসেন (২৭)। সোমবার সকালে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ নিয়ে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় চারজন জেলের মৃত্যু হলো।

এর আগে আবুল কাশেম (৫৫), মো. রিপন (৩৮) ও মো. মিলন (৩৮) নামের তিন জেলে মারা যান। মারা যাওয়া প্রত্যেকেই লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এদের মধ্যে মেহেরাজ চরলক্ষ্মী এলাকার সিরাজুল হকের, কাশেম চরলক্ষ্মী এলাকার মন্তাজল হকের, মিলন একই এলাকার মোজাম্মেল হকের এবং রিপন চরগোসাই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে।

এদিকে, এ দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ আরও আট জেলের মধ্যে সাতজনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তাদের শরীরের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আহতরা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, কক্সবাজার এলাকার সোহেল কোম্পারি এফবি ওশিন নামের ট্রলারটি ২১ জন জেলে নিয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মাছ ধরার উদ্দেশ্য বঙ্গোপসাগরে যায়। ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে ট্রলারের ইঞ্জিন রুমে হঠাৎ করে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ট্রলারের ১২ জেলে অগ্নিদগ্ধ হলে মাছ ধরার অপর ট্রলারের জেলেদের সহযোগিতায় তাদেরকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করেন। সেখানেও অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের মধ্যে ১১ জনকে বৃহস্পতিবার ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এনে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে কাশেম ও রিপন, শনিবার বিকেলে মিলন এবং সোমবার সকালে মেহেরাজের মৃত্যু হয়।

ট্রলারের মাঝি রামগতি উপজেলার চরগাজী এলাকার মো. মনির হোসেন জানান, ঘটনার সময় তিনি ট্রলারের কেবিনের ওপরে ছিলেন। এ সময় ইঞ্জিন রুমে আকস্মিক বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ইঞ্জিন রুম ও কেভিনের ভিতরে থাকা ১২ জেলে দগ্ধ হলে মাছধরার অপর একটি ট্রলারে করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে, ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না বলেও তিনি জানিয়েছেন।

এদিকে, শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধ জেলেদের নিয়ে আসা হলে তাদের চিকিৎসায় এগিয়ে যায় রামগতির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন নিয়ে’। রোগীদের সেবায় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের পাশাপাশি চিকিৎসা খরচের অর্থ সংগ্রহরে জন্য কাজ করছে সংস্থাটি।

‘স্বপ্ন নিয়ে’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বিপদে পড়া জেলেদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তারা। গরীব জেলেদের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।

রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমন জানান, অগ্নিদগ্ধ বেশিরভাগ জেলের বাড়িই তার এলাকায়। আর্থিক সঙ্কটের কারণে ওইসব জেলেদের পরিবার চিকিৎসার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় তাদের চিকিৎসায় যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করার আহ্বানও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

×