ফুটবল মাঠে বাবা-ছেলের লড়াই
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ০৬:২০ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ০৬:৩৭
করোনা মাহামরিতে গৃহবন্দি জীবন যাপন করছে অনেকেই। এতে করে বেড়েই চলছে মোবাইল গেমসের আসক্তি। এই গেমসের আসক্তি কমাতে, নেশা থেকে নতুন প্রজম্মকে দূরে রাখতে দিনাজপুরে হয়ে গেলো বিবাহিত-অবিবাহিতদের ফুটবল প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় ব্যতিক্রম হিসেবে ছিলো বাবা ও ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াই। আনন্দ প্রদানের পাশাপাশি এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই।
একদিকে ফুটবল খেলার আনন্দ। অন্যদিকে বাবা ছেলের লড়াই। তাই অধির আগ্রহ নিয়ে দিনাজপুর সদর উপজেলার শেখপুরা দিঘন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দর্শকের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। শুক্রবার বিকেলে এমন খেলা দেখতে এসেছেন হাজারও ফুটবলপ্রেমী। বাবা-ছেলে দুইজনেই দুই দলের স্ট্রাইকার। প্রতিপক্ষের খেলোয়ারদের পরাস্থ করে বাবা-ছেলের প্রতিপক্ষের জালে গোল পাঠাতে চেষ্টা করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে গোল না হওয়ায় খেলা গড়ায় ট্রাই ব্রেকারে। পুরাতন চাল ভাতে বাড়ে এই প্রবাদ বাক্যকে প্রমাণ করেছে বিবাহিতরা। বিবাহিত-অবিবাহিত আর বাবা-ছেলের লড়াইয়ে শেষ অবধি ২-০ গোলে পরাস্থ হন অবিবাহিত ছেলে। খেলাশেষে অংশগ্রহণকারী দুই দলকে ট্রফি তুলে দেওয়া হয়।
খেলার আগ্রহ এবং নেশা থেকে দূরে রাখতে এমন খেলার আয়োজন বলে জানালেন আয়োজকরা। আয়োজকরা বলছেন, বর্তমান সময়ে করোনার কারণে সকলেই ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন। অনেক ছেলেমেয়েরা মোবাইল গেমস, নেশায় ডুবে থাকছেন। তাই তাদের এমন আশক্ত থেকে দূরে রাখতে আমাদের আজকের হয় এই আয়োজন।
বিকাশ নামে এক ফুটবলপ্রেমী দর্শক বলেন, ফুটবল খেলা বাঙালিদের কাছে একটি ঐহিত্যপূর্ণ খেলা। আর এখানে এসে দেখছি বাবা ছেলে লড়াই করছেন। এটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তাছাড়া আমি কোথাও ফুটবল খেলা হলে দেখতে চলে যাই। এখানে বাবা ছেলের খেলার শুনে নিজেকে আটকাতে পারিনি।
অন্যদিকে প্রতিন্দন্দ্বি বাবা হলেও, ছেলের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হিসেবে খেলায় অংশ নেওয়া বাবা মিহির রায়। মিহির রায় বলেন, বর্তমানে করোনার এই সময়টাতে অনেকেই মোবাইল গেমস ও নেশায় আসক্ত হচ্ছে। তাই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে যাতে করে তারাও নেশা থেকে দুরে থাকতে পারে এবং তাদের শরীর-স্বাস্থ্যও ভাল থাকে। সমাজ গঠনে এমন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
মিহিরি রায়ের ছেলে জনক রায় অনিক বলেন, আমার বাবা এলাকার সব ছেলে বুড়োর কাছে একজন ভালো মানুষ। নেশাগ্রস্থদের আমার বাবা ঘৃণা করে, তাই তার এমন উদ্যোগ। আমার কাছে খেলায় জেতা বড় বিষয় নয়। বাবার সাথে খেলতে পারছি এটাই বড় বিষয়।
সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শেখপুরা ইউনিয়নের চেয়াম্যান মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, খেলার মধ্যে দিয়ে একজন শিশুকে নেশা থেকে দূরে রাখা সম্ভব। আর তাছাড়া খেলাধূলার মধ্যে থাকলে মন এবং শরীর দুটোই ভালো থাকে। এমন আয়োজন যারা করছেন তাদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমি সর্বদা তাদের সঙ্গে আছি।
- বিষয় :
- দিনাজপুর
- ফুটবল
- ফুটবল খেলা
- বাবা-ছেলের লড়াই