ঢাকা বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সিলেটে রোববার খুলবে না অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সিলেটে রোববার খুলবে না অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১০:০৭ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১০:০৭

দেড় বছর বন্ধ থাকার পর রোববার সারাদেশে স্কুল-কলেজ খুললেও সিলেটে খুলবে না বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনা মহামারির প্রভাবে সিলেটে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনেক স্কুল। ভবনের ভাড়া দিতে না পারায় অনেক স্কুল স্থানান্তর করা হলেও নতুন ভবন পাচ্ছে না তারা। বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশিরভাগই কিন্ডারগার্ডেন। এ ছাড়া কয়েকটি মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রাইভেট স্কুলও রয়েছে। 

সিলেট কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে করোনার প্রভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া কিন্ডারগার্টেনের সংখ্যা অর্ধশত বলে জানানো হয়েছে। অর্থ সংকটের কারণে ওইসব স্কুল ও কিন্ডারগার্ডেন বন্ধ হয়ে যায় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া অর্থ সংকটে পড়া অনেক স্কুল টিকে থাকারও চেষ্টা করছে। কোনো স্কুল আবার সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।

স্থায়ী ও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলের মধ্যে রয়েছে- নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বিদ্যারণ্য স্কুল অ্যান্ড মহিলা কলেজ, সুবিদবাজারের রবীন্দ্র-নজরুল মেমোরিয়াল স্কুল, একই এলাকার নলেজ হোম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চৌকিদেখি এলাকার শাহজালাল প্রি-ক্যাডেট একাডেমি, বনকলাপাড়ার সিলসিটি ট্যালেন্ট হোম, শাহপরাণ এলাকার মা-মণি কিন্ডারগার্টেন (দুটি শাখার মধ্যে ১টি), উপশহরের হলিসাইড স্কুলসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গলের 'জাগরণ' নামে একটি স্কুলের ১০টি শাখাও অর্থ সংকটে বন্ধ করা হয়েছে। টুটুল সাহা নামের এক শিক্ষানুরাগী আনন্দ স্কুলের আদলে জাগরণ স্কুল পরিচালনা করছিলেন। সিলেট নগরী ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় আরও বেশকিছু কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। বনকলাপাড়ার সিলসিটি ট্যালেন্ট হোম বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক ও গল্পকার সেলিম আউয়াল বলেন, মহামারিকালে আমরা অনেকটা অর্থ সংকটের কারণে সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছি। আবার চেষ্টা করছি প্রতিষ্ঠানটি খোলার। দু-একদিনের মধ্যে আমরা করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসছি।

প্রায় ১০ বছর আগে নগরীর বাগবাড়ি এলাকায় চালু হওয়া বিদ্যারণ্য স্কুল অ্যান্ড মহিলা কলেজটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে ভবন ভাড়াও দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বন্ধ হওয়া নলেজ হোম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শওকত হোসেন জানিয়েছেন, করোনার সংক্রমণ শুরুর পর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো বেতন মেলেনি। এক বছর স্কুলটি টিকিয়ে রাখার পর স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মা-মণি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক রাশেদা বেগমও একই কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তাদের দুটি শাখার মধ্যে একটি শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে বন্ধ ছাড়াও নগরীর হাওলাদার পাড়ার বিদ্যাসিঁড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কালিবাড়ি এলাকার সাহাবা আইডিয়াল স্কুলসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান কোনোমতে টিকে থাকার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্ট শিক্ষকরা।

সিলেট কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল আলম জানান, শিশু শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সিলেট জেলায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় অর্ধশত স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। সঠিক পরিসংখ্যান বছর শেষে পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।

এদিকে রোববার খোলার জন্য জেলার স্কুল-কলেজে কয়েকদিন ধরেই চলে প্রস্তুতি। শনিবারও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন শিক্ষক ও কর্মচারীরা।

সিলেট বিভাগে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে ১২ লাখ ৮৮ হাজার, মাধ্যমিকে ৮ লাখ ১৮ হাজার, উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজে ২ লাখ ৫০ হাজার এবং সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ মিলে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এ ছাড়া কওমি মাদ্রাসায় আরও ২০ থেকে ২২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।


whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×