পাবলিক পরীক্ষার সময় ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টারগুলো (যেগুলো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের চালানো কোচিং সেন্টার নয়) খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে ফ্রিল্যান্সিং কোচিং মালিকদের সংগঠন 'অ্যাসোসিয়েশন অব শ্যাডো এডুকেশন বাংলাদেশ' (অ্যাসেব)।

রোববার সংগঠনের তেজগাঁও কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান অ্যাসেব নেতারা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুল হাসান সোহাগ, শামসে আরা খান ডলি, মাহবুব আরেফিন, আকমল হোসাইন, পলাশ সরকার প্রমুখ।

অ্যাসেব আহ্বায়ক মো. ইমাদুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকারের হাত ধরে শিক্ষা খাতে আমরা বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করতে পারলেও শিক্ষাক্ষেত্রে একটি সমস্যা হল প্রশ্নপত্র ফাঁস। বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এই প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখাও একটি। যদিও প্রশ্ন তৈরি করা, বিতরণ, সরবরাহ কোনো প্রক্রিয়ার সঙ্গেই ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টারগুলোর কেউ জড়িত নয়। এ কাজগুলো বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে ২৫ জানুয়ারি এসএসসি পরীক্ষার সময় সরকারের পক্ষ থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখি। কিন্তু দৃশ্যমান ফল হলো সে বছর বিগত সময়ের মতই প্রশ্নপত্র ফাঁস অব্যাহত থাকে। আবার ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে পিইসি পরীক্ষার সময় সরকার কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করেননি, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোও খোলা ছিল, কিন্তু কোনো প্রশ্নফাঁস হয়নি। এর থেকে এটা সহজেই অনুমেয়, ফ্রিল্যান্সারদের দ্বারা পরিচালিত ছায়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সঙ্গে প্রশ্নফাঁস হওয়া আদৌ সম্পর্কযুক্ত নয়। ফলে আমরা বলতেই পারি, প্রশ্নফাঁসের জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

অ্যাসেব নেতৃবৃন্দ সরকারের কাছে দাবি জানান, বৃহত্তর স্বার্থে ছায়াশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসা হোক। যাতে পাবলিক পরীক্ষার সময়ও বন্ধ রাখতে না হয়। এতে করে বৈষম্য হ্রাস পাবে, শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না এবং মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতায় আসতে উৎসাহিত হবে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে তারা জানান, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৯০ জন গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে চারজন সন্দেহভাজন কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে কোচিংয়ের লোকজন জড়িত, এমন অভিযোগে সব কোচিং সেন্টার বন্ধের আওতায় আনা যুক্তিসংগত নয়।