করোনাকাল
দৃষ্টিহীনে আলো ছড়াচ্ছে মানবিক সাহায্য সংস্থা

ভিডিও কলে রোগীকে চক্ষুসেবা দিচ্ছেন মানবিক সাহায্য সংস্থার চিকিৎসক ফজলুর রশীদ - সমকাল
সাজিদা ইসলাম পারুল
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২০ | ১২:০০
সত্তর বছর বয়সী গোলহার বেগম বয়সের ভারে অনেকটাই নুয়ে পড়েছেন। বাড়ি রাজশাহী। এরই মধ্যে গত কয়েক বছরে চোখে পড়া ছানি পরিপকস্ফ হয়ে উঠেছে তার। চোখের তীব্র ব্যথাটাও ভোগাচ্ছে তাকে। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে পরিবারের কেউ হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাহস পাচ্ছিলেন না। ফলে দিন-রাত যন্ত্রণাকে সঙ্গী করে নিয়েছিলেন তিনি। এক দিন সন্ধ্যায় 'চ্যানেল আই'-এর স্ট্ক্রলে বেসরকারি সংগঠন মানবিক সাহায্য সংস্থার (এমএসএস) অনলাইনে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা প্রদানের বিষয়টি গোলহারের সন্তানের নজরে আসে। এর পরেই ০১৭০৮১৪৩৮৮৮ নম্বরে কল করে চক্ষু চিকিৎসাসেবা নেন গোলহার। এমনকি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাজশাহীর মক্কা আই হাসপাতালে বিনামূল্যে তার চোখের ছানিও অপারেশন করে দেবে এমএমএস।
উত্তরার বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সী আতিকুর রহমানও এমএমএস-এর হেল্পলাইনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নেন। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি জানান, চোখে ছানি পড়ায় দেখতে সমস্যা হয়।
এক ধরনের অস্থিরতা। হালকা ব্যথাও রয়েছে। হেল্পলাইনে যোগাযোগ করলে সংশ্নিষ্ট চিকিৎসক ভিডিওতে কথা বলেন। ওষুধ দেন।
শুধু গোলহার বা আতিকুরই নন, সমাজের বিভিন্ন স্তরের ২১০ জন এমএসএস-এর চিকিৎসাসেবার আওতায় এসেছেন। এদের বেশিরভাগই সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন। করোনাকালে ঘরে বসেই চিকিৎসা পেয়ে চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়েছেন।
জানা যায়, কভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে 'চক্ষুসেবা হেল্পলাইন'-এর মাধ্যমে ঘরে বসেই বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা পেতে শুরু করেছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মানবিক সাহায্য সংস্থার (এমএসএস) আই কেয়ার প্রোগ্রাম হেল্পলাইনের মাধ্যমে বিনামূল্যে এই চক্ষু চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। রবি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ০১৭০৮১৪৩৮৮৮ ও ০১৩১৩৪০৩০২০ এই দুটি নম্বরের মাধ্যমে চক্ষু চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
সংস্থার মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগীয় প্রধান স্বপনা রেজা জানান, হেল্পলাইনের মাধ্যমে বিনামূল্যে ডাক্তারের সঙ্গে শলা-পরামর্শ, চিকিৎসাপত্র প্রদান এবং উপদেশ দেওয়া, ঢাকা শহরে বসবাসকারী রোগীদের খুচরা মূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ স্বল্প খরচে পৌঁছে দেওয়া, যেসব রোগীর রেফারেল চিকিৎসা প্রয়োজন হয়, তাদের কাছাকাছি সহযোগী হাসপাতালে রেফার করা হয়। ১১টি জেলার ২১টি উপজেলায় মানবিক সাহায্য সংস্থার আই কেয়ার প্রোগ্রামের সহযোগী হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালের তথ্য এবং প্রয়োজনীয় ফি রোগীদের খুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত এমএসএস আই কেয়ার প্রোগ্রামের হেল্পলাইনের সহায়তায় ২৬টি জেলা থেকে মোট ২১০ রোগী ঘরে বসে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন। ৬৩ জন রোগী উন্নত হাসপাতালের রেফারেল সুবিধা পেয়েছেন।
সংস্থার প্রেসিডেন্ট ফিরোজ এম হাসান বলেন, 'হাসপাতাল এবং ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়ার বিকল্প হিসেবে টেলিফোন বা ভিডিওকলে ডাক্তারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় চক্ষুসেবা গ্রহণের এই কার্যক্রমটি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে সহায়ক।' তিনি আরও বলেন, পরামর্শ গ্রহণের সেবাটি সবার জন্য ফ্রি, তবে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের যাবতীয় চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের খরচ আই কেয়ার প্রোগ্রাম এমএসএস বহন করবে।
১৯৭৪ সাল থেকে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মানবিক সাহায্য সংস্থা কাজ করে আসছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্থার রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি। সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশের শহর, গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা দিতে নিরাময়যোগ্য অন্ধত্ব দূরীকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে মানবিক সাহায্য সংস্থার আই কেয়ার প্রোগ্রাম। চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত ১৫১টি চক্ষুশিবির, ১২২টি স্কুলের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা স্কুল সাইট টেস্টিং প্রোগ্রাম, ৪টি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইট টেস্টিং প্রোগ্রাম এবং সুস্থ চোখ নিরাপদ সড়ক প্রোগ্রামের মাধ্যমে মোট ১ লাখ ১০ হাজার ১৫৬ জন দরিদ্র রোগী বিনামূল্যে চক্ষুসেবা পেয়েছেন। আই কেয়ার প্রোগ্রাম এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭৭৬টি অপারেশন করেছে, বিতরণ করেছে ২১ হাজার ৭২৫টি চশমা এবং ২ হাজার ৪৯৬ জনের মাঝে ওষুধ। এ ছাড়া সুস্থ চোখ, নিরাপদ সড়ক- এই স্লোগান সামনে রেখে গণপরিবহন চালকদের চক্ষু পরীক্ষার জন্য ঢাকার দুটি বাস ও ট্রাক টার্মিনালে চক্ষুশিবির বাস্তবায়ন করা হয়। আই কেয়ার প্রোগ্রাম ক্রমাগত তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি করছে।
উত্তরার বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সী আতিকুর রহমানও এমএমএস-এর হেল্পলাইনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা নেন। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি জানান, চোখে ছানি পড়ায় দেখতে সমস্যা হয়।
এক ধরনের অস্থিরতা। হালকা ব্যথাও রয়েছে। হেল্পলাইনে যোগাযোগ করলে সংশ্নিষ্ট চিকিৎসক ভিডিওতে কথা বলেন। ওষুধ দেন।
শুধু গোলহার বা আতিকুরই নন, সমাজের বিভিন্ন স্তরের ২১০ জন এমএসএস-এর চিকিৎসাসেবার আওতায় এসেছেন। এদের বেশিরভাগই সেবা পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন। করোনাকালে ঘরে বসেই চিকিৎসা পেয়ে চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়েছেন।
জানা যায়, কভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে 'চক্ষুসেবা হেল্পলাইন'-এর মাধ্যমে ঘরে বসেই বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা পেতে শুরু করেছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মানবিক সাহায্য সংস্থার (এমএসএস) আই কেয়ার প্রোগ্রাম হেল্পলাইনের মাধ্যমে বিনামূল্যে এই চক্ষু চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে। রবি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ০১৭০৮১৪৩৮৮৮ ও ০১৩১৩৪০৩০২০ এই দুটি নম্বরের মাধ্যমে চক্ষু চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
সংস্থার মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগীয় প্রধান স্বপনা রেজা জানান, হেল্পলাইনের মাধ্যমে বিনামূল্যে ডাক্তারের সঙ্গে শলা-পরামর্শ, চিকিৎসাপত্র প্রদান এবং উপদেশ দেওয়া, ঢাকা শহরে বসবাসকারী রোগীদের খুচরা মূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ স্বল্প খরচে পৌঁছে দেওয়া, যেসব রোগীর রেফারেল চিকিৎসা প্রয়োজন হয়, তাদের কাছাকাছি সহযোগী হাসপাতালে রেফার করা হয়। ১১টি জেলার ২১টি উপজেলায় মানবিক সাহায্য সংস্থার আই কেয়ার প্রোগ্রামের সহযোগী হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালের তথ্য এবং প্রয়োজনীয় ফি রোগীদের খুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।
গত রোববার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত এমএসএস আই কেয়ার প্রোগ্রামের হেল্পলাইনের সহায়তায় ২৬টি জেলা থেকে মোট ২১০ রোগী ঘরে বসে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন। ৬৩ জন রোগী উন্নত হাসপাতালের রেফারেল সুবিধা পেয়েছেন।
সংস্থার প্রেসিডেন্ট ফিরোজ এম হাসান বলেন, 'হাসপাতাল এবং ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়ার বিকল্প হিসেবে টেলিফোন বা ভিডিওকলে ডাক্তারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় চক্ষুসেবা গ্রহণের এই কার্যক্রমটি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও বিস্তার রোধে সহায়ক।' তিনি আরও বলেন, পরামর্শ গ্রহণের সেবাটি সবার জন্য ফ্রি, তবে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের যাবতীয় চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের খরচ আই কেয়ার প্রোগ্রাম এমএসএস বহন করবে।
১৯৭৪ সাল থেকে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মানবিক সাহায্য সংস্থা কাজ করে আসছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্থার রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি। সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশের শহর, গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা দিতে নিরাময়যোগ্য অন্ধত্ব দূরীকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে মানবিক সাহায্য সংস্থার আই কেয়ার প্রোগ্রাম। চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত ১৫১টি চক্ষুশিবির, ১২২টি স্কুলের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা স্কুল সাইট টেস্টিং প্রোগ্রাম, ৪টি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইট টেস্টিং প্রোগ্রাম এবং সুস্থ চোখ নিরাপদ সড়ক প্রোগ্রামের মাধ্যমে মোট ১ লাখ ১০ হাজার ১৫৬ জন দরিদ্র রোগী বিনামূল্যে চক্ষুসেবা পেয়েছেন। আই কেয়ার প্রোগ্রাম এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭৭৬টি অপারেশন করেছে, বিতরণ করেছে ২১ হাজার ৭২৫টি চশমা এবং ২ হাজার ৪৯৬ জনের মাঝে ওষুধ। এ ছাড়া সুস্থ চোখ, নিরাপদ সড়ক- এই স্লোগান সামনে রেখে গণপরিবহন চালকদের চক্ষু পরীক্ষার জন্য ঢাকার দুটি বাস ও ট্রাক টার্মিনালে চক্ষুশিবির বাস্তবায়ন করা হয়। আই কেয়ার প্রোগ্রাম ক্রমাগত তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি করছে।
- বিষয় :
- দৃষ্টিহীনে আলো