- বাংলাদেশ
- চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষ জনশক্তি হতে হবে
এনএসডিএর সভায় প্রধানমন্ত্রী
চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষ জনশক্তি হতে হবে

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি- পিআইডি
তরুণরা কেবল চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের যাতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, সে জন্য সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য তরুণদের উৎসাহিত করার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যে আভাসটা পাচ্ছি, আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না, বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে না। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের জনশক্তিকে গড়ে তুলতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী রোববার তাঁর কার্যালয়ে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) গভর্নিং বোর্ডের প্রথম সভায় এসব কথা বলেন। পরে তাঁর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খবর বাসসের।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুবসমাজকে তাদের নিয়মিত অধ্যয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে, যাতে তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম সমাজে তাদের অবস্থান যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে বজায় রাখতে পারে।তরুণদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের যে প্রতিষ্ঠান আছে সিআরআই, তার মাধ্যমে ইয়াং বাংলা তারা (যুবকরা) যেন স্বপ্রণোদিত হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে তাদের আমরা উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, 'শুধু বিএ, এমএ পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল ও কলেজ, যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে শুধু কোনোমতে ঘষেমেজে বিএ, এমএ পাস করেই চাকরির পেছনে ছুটে বেড়ায়। তিনি বলেন, আমরা এমন ব্যবস্থা চাই, যাতে দেশের যুবসমাজ সুদক্ষ কারিগর হিসেবে গড়ে ওঠে এবং দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিয়েই কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে। যার যে মেধা আছে, দক্ষতা আছে, সেটাও যেন বিকশিত হতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার কাজ আমি করে খাব। আমি চাকরির পেছনে ছুটব না, নতুন চাকরি দেব। এভাবেই তাদের কিন্তু আমরা উৎসাহিত করে যাচ্ছি। আমাদের যুবসমাজকে সেটাই অনুধাবন করাতে হবে। তিনি বলেন, যত বেশি দক্ষ জনশক্তি আমরা গড়তে পারব, আমাদের দেশের কাজেও যেমন লাগবে, আবার বিদেশেও লাগবে। আমরা চাই আমাদের দেশটা এগিয়ে যাক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষ জনবল তৈরি হয়েছে বা সম্ভাবনা রয়েছে- তা নিয়ে দেশে ও বিদেশে দক্ষতা মেলার আয়োজন করা যেতে পারে। দক্ষতা সনদায়নের ক্ষেত্রে একক সনদায়নের ব্যবস্থা প্রবর্তন ও কার্যকর করতে হবে, যা বিদেশে বাংলাদেশের দক্ষতার ব্র্যান্ডিং হিসেবে কাজ করবে এবং বিদেশের শ্রমবাজারে বাংলাদেশি কর্মীদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে।
তিনি বলেন, আমরা যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি, সেখানে শুধু রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করলে আমাদের হবে না। আমাদের এখানে উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং বহুমুখীকরণ করতে হবে। রপ্তানিও বাড়াতে হবে। আরও কী কী পণ্য আমরা রপ্তানি করতে পারি, তার জন্য নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস ও এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন