ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

নারী সাংবাদিকের শ্লীলতাহানির পর রটানো হচ্ছে কুৎসা

নারী সাংবাদিকের শ্লীলতাহানির পর রটানো হচ্ছে কুৎসা

নারী সাংবাদিকের ওপর হামলা (ফাইল ফটো)

সমকাল প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ | ০৩:২৮

সাংবাদিক রাফিয়া তামান্নাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করেই ক্ষান্ত হয়নি দুর্বৃত্তরা। এবার তারা নেমেছে অপপ্রচারে। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ-পেজে দেওয়া হচ্ছে আপত্তিকর পোস্ট। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বনশ্রীতে ছোট ভাই, বন্ধুসহ হামলার শিকার হন রাফিয়া। তিনি বলেন, হামলায় জড়িতরা এবং তাদের সমমনারাই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েছি। জিডিও করব। 

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অভিযানে প্রধান অভিযুক্ত সোয়েব রহমান জিশানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। অন্যরা হলো রাইসুল ইসলাম ও কাউসার হোসেন। জিশানের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ এবং কাওসারের বিরুদ্ধে বরিশালের কোতোয়ালি থানায় মামলা রয়েছে। জিশান ঘটনার সময় টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক পরিচয় দেয়।

সাংবাদিক রাফিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনশ্রী ই-ব্লকের তিন নম্বর সড়কের একটি জুসের দোকানে সেদিন তাঁর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেখান থেকে বের হওয়ার পর আরও দু’জন এসে তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা রাফিয়া ও তাঁর ভাই এবং রাফিয়ার বন্ধুকে মারধর করে। এ সময় শ্লীলতাহানির শিকার হন রাফিয়া। এ ঘটনায় তিনি রামপুরা থানায় মামলা করেন। সেখানে জিশানের নাম উল্লেখ এবং বাকিদের অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

রাফিয়া সমকালকে বলেন, আমাদের রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। হেনস্তাকারীদের কিশোর গ্যাং মনে হয়েছে। উত্ত্যক্তের সময় দু-তিনজনের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হতেই ওরা মুহূর্তে ১০-১২ জনকে ডেকে নেয়। এর পর এ ঘটনা নিয়ে আর কথা না বলতে চাপ দেওয়া হয়। তাতে কাজ না হওয়ায় ফেসবুকে আজেবাজে কথা লিখে মানহানির চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাফিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে বনশ্রীবাসী গ্রুপে আপত্তিকর পোস্ট দিয়েছেন জাপানি গাড়ি বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট মুনতাসাম হোসাইন। নিজের প্রোফাইলেও একাধিক পোস্ট দিয়েছেন তিনি। আরেকটি গ্রুপের সদস্য আসিক মাহমুদসহ কয়েকজন দিয়েছেন কুরুচিপূর্ণ পোস্ট। 

সরেজমিন এই নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক তথ্য পাওয়া যায়নি। শাহী জুস কর্নারে ঘটনার সূত্রপাত। সেই দোকানের কর্মী মো. লিটন জানান, নারী সাংবাদিকের দিকে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তির তাকানো নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার শুরু হয়। পরে সাংবাদিক দোকান থেকে বের হয়ে যান। মারধরের ঘটনা ঘটে রাস্তায়।

ঘটনাস্থলের ফুচকা বিক্রেতা কুবির ইসলাম জানান, দুই যুবক নারী সাংবাদিকের ভাইকে মারধর করছিলেন। তখন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন সাংবাদিক। 

মামলার এজাহারে রাফিয়া লিখেছেন, ‘এক লোক বারবার তাকাচ্ছিল দেখে জানতে চাই, চেনেন কিনা। এ কথা শুনে উনি উত্তেজিত হন। পরে হামলার ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়।’ 

র‍্যাব-৩-এর স্টাফ অফিসার (গণমাধ্যম) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সনদ বড়ুয়া জানান, জিশানকে মেরাদিয়া থেকে, বেইলি রোড থেকে রাইসুল এবং গেণ্ডারিয়া থেকে কাউসারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও পড়ুন

×