ঢাকা শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উদ্যোগ

শিশুরাই সব

শিশুরাই সব

লায়লা খন্দকার

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২১ | ১২:০০

শিশুরাই কি সব? শিশুদের অধিকারে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের একটি স্বেচ্ছা উদ্যোগ 'শিশুরাই সব'। এ উদ্যোগটি বিশ্বাস করে- সব শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, বিনোদন এবং অংশগ্রহণের অধিকার আছে। শিশুদের ভবিষ্যৎ শুধু নয়, বর্তমানকে অর্থবহ করাটা বড়দের দায়িত্ব। শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিত করতে মা-বাবা, শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, সেবাদানকারী, মিডিয়াকর্মী, লেখক, শিল্পীসহ সমাজের প্রত্যেককে নিজস্ব অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। আইন, নীতি, অবকাঠামো এবং সব ধরনের সেবা শিশুর জন্য সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। শিশুদের চোখ দিয়ে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা ও তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা দরকার। পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সে চর্চা করা উচিত।
শিশু সংবেদনশীল সমাজ গঠনে সচেতনতা ও দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে শিশুরাই সব ২০২০-এর আগস্টে একটি ফেসবুক পেজ চালু করে এবং সেপ্টেম্বরে ওয়েবসাইটও খোলা হয়। লিঙ্কগুলো দেওয়া হলো- ওয়েবসাইট :www.shishuraishob.com

ফেসবুক :www.facebook.com/  shishuraishob
শিশুরাই সব যা করেছে
বর্তমানে ফেসবুক পেজটি বাংলাদেশ, ভারত, ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ৩৪টি দেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার ব্যক্তি ফলো করেন। এ পর্যন্ত নিচের বিষয়গুলো শিশুরাই সব পোস্ট করেছে- শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা, বিনোদনসহ শিশুমনস্ক সমাজ সংক্রান্ত নানা বিষয়ে লেখা ও ভিডিও; শিশু সংক্রান্ত আইন, নীতি, সনদ এবং গবেষণামূলক রিপোর্ট; শিশুদের ভাবনা, সন্তানদের বড় করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর; শিশুদের জন্য সৃষ্টিশীল কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পরামর্শ।
শিশুরাই সব-এ প্রকাশিত বেশিরভাগ বিষয় বাংলায়, তবে ইংরেজিতেও কিছু বিষয় আছে। নিজেদের তৈরি বিষয়বস্তুর পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার বার্তা, ভিডিও ইত্যাদি পোস্ট করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স, ব্র্যাক, দুর্যোগ ফোরামের কথা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া যৌন নির্যাতন থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে ফেসবুকে একটি সরাসরি অনুষ্ঠান করা হয়েছিল, যা এ নিয়ে আলোচনার সুযোগ তৈরি করেছে। সম্প্রতি অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও শিশুরাই সব নিজেদের উদ্যোগে একটি ভিডিও তৈরি করেছে। শিশুদের স্ট্ক্রিনে আসক্তি কমিয়ে স্ট্ক্রিনে কাটানো সময় যাতে তাদের বিকাশে কাজে লাগানো যায় সে সংক্রান্ত পরামর্শ এখানে আছে। ভিডিওটি অনেকের ভালো লেগেছে এবং অন্যদের সঙ্গে শেয়ারও হয়েছে।

শিশু অধিকার বিশেষজ্ঞদের নিয়ে শিশুরাই সব-এর একটি উপদেষ্টা বোর্ড আছে। এ বোর্ডের সদস্যরা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এখন পর্যন্ত অনেকেই শিশুরাই সব নিয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এমন উদ্যোগ আগে থাকলে পূর্ববর্তী প্রজন্মের শিশুদের জীবন-মান আরও ভালো হতো। অনেকে শিশুরাই সব-এর সঙ্গে যুক্ত থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
শিশুরাই সব শিশু অধিকার সংক্রান্ত নানা বিষয়ে লেখা, ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশের কাজ চালিয়ে যাবে। ফেসবুক লাইভ এবং সরাসরি অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাও আছে। বিষয়ভিত্তিক প্রচারণাও হতে পারে।
কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন- শিশুরাই সব কি শুধু মা-বাবার জন্য? সঠিক উপায়ে সন্তানদের বড় করা নিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। তবে আমাদের বিশ্বাস, শিশু সংবেদনশীল সমাজ গঠনে প্রত্যেকেরই শিশুদের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি ও চাহিদা বুঝতে হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মিডিয়াকর্মীদের জানতে হবে কীভাবে শিশুদের সাক্ষাৎকার নেওয়া যায়। স্থপতি ও পরিকল্পনাবিদদের শিশুদের উপযোগী নকশা নিয়ে সচেতনতা ও দক্ষতা প্রয়োজন। শিশুরাই সব সমাজের সর্বস্তরের বড়দের জন্য।
এর সঙ্গে যুক্ত থাকা যায় ওয়েবসাইটে গিয়ে ও ফেসবুক পেজটি ফলো করে।
ফেসবুকে প্রকাশিত বিষয়াবলিতে লাইক ও মন্তব্য; প্রয়োজনীয় মনে করলে অন্যদের জানানো এবং শেয়ার করা যায়। নিজের বা সংস্থার তৈরি শিশু অধিকার সম্পর্কিত লেখা (৫০০ শব্দের মধ্যে), ভিডিও ইত্যাদি পাঠানো যায়। সন্তানদের বড় করা এবং শিশু সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নও করা যায়।
শিশুরাই সব-এ আরও যেসব বিষয় উপস্থাপিত হওয়া উচিত, তা নিয়ে মতামত জানানো যায়।
আপনি যদি কোনো লেখা, ভিডিও পাঠাতে চান তাহলেshishuraishob@gmail.com-এ ই-মেইল করুন। আমরা 'শিশুরাই সব'-এর সম্পাদকীয় নীতিমালা পাঠিয়ে দেব।
আফ্রিকা মহাদেশে এক প্রবাদ আছে- 'একজন শিশুকে বড় করতে পুরো গ্রামের প্রয়োজন।' আমরা আশা করছি, শিশুরাই সব এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হবে, যেখানে সমাজের সবাই শিশু সংক্রান্ত বিষয় জানবে, আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে এবং আন্তরিকতার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসবে। এর ফলে শিশুরা পরিপূর্ণভাবে এবং আনন্দের সঙ্গে বেড়ে উঠবে। আপনিও শিশুরাই সব-এর সঙ্গে থাকুন।
আহ্বায়ক, শিশুরাই সব

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×