ঢাকা রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মহাকাব্যিক নাট্যব্যক্তিত্ব

মহাকাব্যিক নাট্যব্যক্তিত্ব

সুবর্ণা মুস্তাফা

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২২ | ১২:০০

সেলিম আল দীনের দর্শন বা তাঁর নাট্যচিন্তা ছিল অন্য দশজন থেকে একেবারেই আলাদা। তিনি যা করতে চেয়েছেন বা আমাদের মধ্যে যে বিষয়টি তিনি ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন, তা হলো নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হলে শিকড়ে ফিরে যেতে হবে। নিজের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে জানতে হবে, যা তিনি তাঁর লেখা ও কাজের মধ্য দিয়ে অদ্ভুতভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর লেখার ভেতরে আমাদের ঐতিহ্যগুলো বারবার তুলে ধরেছেন।
আমার বয়স তখন ১৪, তখন সেলিম আল দীনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর লেখার সঙ্গেও পরিচয় হয়। আমার অভিনীত প্রথম মঞ্চ নাটক ছিল তাঁর লেখা 'জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন'। এরপর অভিনয় করলাম তাঁর মিউজিক্যাল কমেডি 'মুনতাসির ফ্যান্টাসি'তে। তারপর 'শকুন্তলা' নাটকে মেনকাও করলাম, শকুন্তলাও করলাম। আমার জন্য মাইলস্টোন কাজ 'শকুন্তলা'।

সেলিম আল দীন [জন্ম :১৮ আগস্ট, ১৯৪৯, মৃত্যু :১৪ জানুয়ারি, ২০০৮]

সেলিম ভাইয়ের চর্যাপদ থেকে শুরু করে এমন কিছু ছিল না যে তাঁর পড়া ছিল না। রবীন্দ্রনাথ তাঁর পুরো মুখস্থ ছিল। তাঁর লেখা ছিল ম্যাজিকেল। ভাবা যায় তিনি তাঁর ২৫ বা ২৬ বছর বয়সে শকুন্তলা লিখেছেন। আমার সবচেয়ে ভালো লাগার নাটক শকুন্তলা, যা আগেও বলেছি। শকুন্তলার গল্পকে যে এভাবেও ভাঙা যায়, তা বুঝিয়ে দিলেন সেলিম আল দীন। পৌরাণিক মহাভারতের শকুন্তলাকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপন করলেন তিনি।
আমরা যাঁরা সেলিম আল দীনের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা প্রত্যেকেই শিখেছি। মানুষের চিন্তা যে, কতভাবে হতে পারে, তা তিনি দেখিয়েছেন অনেক ছোট ছোট বিষয়ের মধ্য দিয়ে। তাঁর 'যৈবতী কইন্যার মন' নাটকের একটা জায়গায় পরী পানির দিকে তাকিয়ে নিজের ছায়া দেখে বলে, 'আমাকে ছুঁলে ওকে ছোঁয়া হয়, কিন্তু ওকে ছুঁলে তো আমাকে ছোঁয়া হয় না।' আমিও চিন্তা করেছি। তাই তো আমাকে ছোঁয়া হলে ওকে ছোঁয়া হয়। কিন্তু ওকে ছুঁলে আমাকে ছোঁয়া হয় না।

আরও পড়ুন

×