ঢাকা রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

বন্ধু হুয়াওয়ে

ইন বাংলাদেশ ফর বাংলাদেশ

ইন বাংলাদেশ ফর বাংলাদেশ

সাব্বিন হাসান

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৩ | ০৮:৪৮

হুয়াওয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ’ মূলমন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরে যথাসাধ্য কাজ করছে। ২৫ বছর ধরে ব্র্যান্ডটি আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতে বহুমাত্রিক সেবাসহ উদ্ভাবনী সমাধান, ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন, বাংলাদেশে স্মার্ট ইকোসিস্টেমের বিকাশ ও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

বাংলাদেশে ২৫ বছরের যাত্রা অতিক্রম করেছে হুয়াওয়ে। ব্র্যান্ডটি দেশের ভবিষ্যৎ রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পাশে থেকে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ঢাকায় অনুষ্ঠিত হুয়াওয়ে বাংলাদেশের ২৫ বছরপূর্তি
উদযাপন অনুষ্ঠানে এমন ঘোষণার কথা জানাল হুয়াওয়ে। লিখেছেন সাব্বিন হাসান

সারাদেশে টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি প্রযুক্তিকে সহজলভ্য করেছে। ফাইভজি প্রযুক্তির অধিগ্রহণে কাজ করছে হুয়াওয়ে। ২০১৮ সালে দেশ যখন সবে ফোরজির যুগে প্রবেশ করেছে, তখন প্রতিষ্ঠানটি ফাইভজি ট্রায়াল সম্পন্ন করে। ২০২১ সালে ফাইভজি প্রযুক্তি উন্মোচনে বিশ্বের অগ্রগামী দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে টেলিটককে সহায়তা করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩ আসরে প্রতিষ্ঠানটি সর্বাধুনিক ৫.৫জি প্রযুক্তি ও খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইউজ কেস (ডিজিটাল রূপান্তর) প্রদর্শন করে। হুয়াওয়ে ফাইবারের মাধ্যমে ১৫ হাজারেরও বেশি বেস ট্রান্সসিভার স্টেশনে (বিটিএস) যুক্ত করে।

২০১৮ সালে হুয়াওয়ে বাংলাদেশে ‘ডিজিটাল পাওয়ার’ সেবা দেওয়া শুরু করে। ময়মনসিংহে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ একাধিক বৃহৎ আকারের আইপিপি এবং রুফটপ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। হুয়াওয়ে নিজস্ব সরঞ্জামের মাধ্যমে ৩৮ কোটি (প্রায়) ইউনিট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করেছে। ফলে ১৮০ হাজার টন কার্বন নিঃসরণ কমেছে, যা আড়াই লাখ গাছ লাগানোর সমতুল্য।

গভর্ন্যান্স, ফাইন্যান্স, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মিডিয়া, উৎপাদন, পরিবহন ছাড়াও বিশেষ খাতের জন্য সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও এআইকেন্দ্রিক ক্লাউড সমাধান দিয়েছে হুয়াওয়ে।

স্মার্ট ডিভাইস নির্মাতা ও আইসিটি অবকাঠামো সেবাদাতা বিশ্বের নেতৃস্থানীয় ব্র্যান্ডের সহযোগী, গ্রাহক ও সংশ্লিষ্ট খাতের স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতা, বিশ্বাস ও নির্দেশনায় নতুন ভবিষ্যৎ বির্নিমাণে পথ চলবে হুয়াওয়ে– এমন মনোভাব থেকেই উদযাপিত হয় ‘২৫ ইয়ারস অব টুগেদারনেস, জার্নি অব ট্রাস্ট, সাপোর্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ’।

হুয়াওয়ে বাংলাদেশের (সিইও) এবং হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যান জুনফেং অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। স্মরণীয় মুহূর্ত উদযাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম ছাড়াও সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্যে প্যান জুনফেং জানালেন, বহু বছর আগে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত কারিগরি সহযোগী হিসেবে যাত্রা শুরু করে হুয়াওয়ে। ভবিষ্যতেও এমন ধারা অব্যাহত থাকবে। হুয়াওয়ে ব্র্যান্ডে অটুট আস্থা রাখায় বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। অবিশ্বাস্য এই যাত্রায় অনুপ্রাণিত হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরে অবদান রাখতে নিরলস কাজ করবে হুয়াওয়ে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে যুগোপযোগী মানুষের শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে এগিয়ে চলেছি। অগ্রযাত্রায় চীনের মতো বন্ধুপ্রতিম দেশের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছি।

মঞ্চে দাঁড়িয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ফাইভজি সূচনায় হুয়াওয়ে ছিল সহায়ক শক্তি। বিশ্বাস করি, আগামীতে বাংলাদেশে স্মার্ট রূপান্তরে হুয়াওয়ে হবে সহায়ক শক্তি। বিগত ২৫ বছর ধরে হুয়াওয়ে যেভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করে বাংলাদেশের জন্য কাজ করেছে, তা সত্যিই উদাহরণযোগ্য।

আইসিটি বিভাগের সচিব মো. শামসুল আরেফিন জানালেন, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামো ও সমাজের বিকাশে হুয়াওয়ে অটল। বাংলাদেশের জন্য যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, তার সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সহায়ক। ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশে রূপান্তর প্রচেষ্টায় আরেকটি মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে আছি। স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পথে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে হুয়াওয়ে বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো অবিচল। বাংলাদেশে আইসিটি ক্ষেত্রে মেধা বিকাশে হুয়াওয়ে সত্যিকার অর্থেই অতুলনীয়।

ই -গভর্ন্যান্স উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে ই-পুলিশিং, ইনফো-সরকার ২,  ইনফো-সরকার ৩ ছাড়াও বেশ কিছু প্রজেক্টে কাজ করেছে হুয়াওয়ে। যেমন ডিজিটাল সিটি প্রকল্পের অধীনে সিলেটে আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহের মাধ্যমে আইন রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও শক্তিশালী এবং সিলেটসহ কক্সবাজারে পাবলিক ওয়াই-ফাই জোন তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে হুয়াওয়ে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হুয়াওয়ের আছে স্মার্ট প্রযুক্তি। যার মাধ্যমে যেকোনো হাইওয়েতে সিসিটিভি সার্ভিলেন্স, গতি-সীমা লঙ্ঘন শনাক্তকরণ, গাড়ির নম্বর শনাক্তকরণ, বেআইনিভাবে গাড়ি পার্ক নিয়ন্ত্রণ, দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করাসহ আরও কিছু সুবিধা। ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবহার করা হচ্ছে হুয়াওয়ের স্মার্ট প্রযুক্তি।

বাংলাদেশে ক্যাশ-লেশ সোসাইটি তৈরি করতেও ভূমিকা রাখছে হুয়াওয়ে। বাংলাদেশের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল ক্ষেত্রে আধুনিক সব সার্ভিস ও সল্যুশন দিয়েছে হুয়াওয়ে। যার ধারাবাহিকতায় বিকাশ ও হুয়াওয়ে সম্প্রতি চুক্তি সই করেছে যেখানে দুই প্রতিষ্ঠান টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সবার জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে আরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে একসঙ্গে কাজ করবে। এসব আধুনিক সল্যুশন ও সার্ভিসের পাশাপাশি হুয়াওয়ে বাংলাদেশে সর্বাধুনিক ক্লাউড সেবা নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশে শিক্ষা ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে হুয়াওয়ে। সবার জন্য স্মার্ট এডুকেশন সহজলভ্য করতে চীনা দূতাবাসের সঙ্গে সহযোগিতায় চাঁদপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে হুয়াওয়ে। তা ছাড়া বাংলাদেশে বুয়েটসহ মোট ছয়টি আইসিটি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে হুয়াওয়ে।

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে হুয়াওয়ের রয়েছে যুগান্তকারী প্রযুক্তি। হুয়াওয়ের ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইতোমধ্যেই চীনে রিমোট সার্জারি সম্পন্ন করা হয়েছে। এমন সুবিধা বাংলাদেশের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসতে সক্ষম। কৃষি, ভূমি প্রশাসন, পানিসম্পদ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, আইন ও বিচার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা— সেবায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে সক্ষম হুয়াওয়ে।

আরও পড়ুন

×