দক্ষিণ চীন সাগরে 'অজ্ঞাত বস্তুর' সঙ্গে ধাক্কা খেল মার্কিন সাবমেরিন

ইউএসএস কানেকটিকাট
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২১ | ০০:৪৩ | আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২১ | ০০:৪৩
দক্ষিণ চীন সাগরের আশপাশের জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি পারমাণবিক সাবমেরিন পানির নিচ দিয়ে চলার সময় 'অজ্ঞাত' একটি বস্তুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে। শনিবারের এ ঘটনার ১৫ নাবিক সামান্য আহত হয়েছে।
মার্কিন নৌবাহিনীর মুখপাত্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এরপরও ইউএসএস কানেটিকাট নামের সাবমেরিনটি পুরোপুরি সচল আছে। সাবমেরিনটি এখন গুয়ামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ধাক্কায় এর কী ক্ষতি হয়েছে তা পুরোপুরি যাচাই করা যায়নি। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
এমন এক সময়ে ঘটনাটি ঘটল যখন ওই অঞ্চলকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনা বিমানের একের পর এক 'অনুপ্রবেশের' ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক তৎপর রয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইউএসএস কানেটিকাট কী কারণে সাবমেরিনটি অজ্ঞাত বস্তুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে, তা এখনও অস্পষ্ট।
তবে দক্ষিণ চীন সাগরের ওই অংশ বিশ্বের অন্যতম বিরোধপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। ফিলিপিন্স, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে চীনের বিরোধ কয়েক দশকের। চীন ওই সাগরের বেশিরভাগ অংশের মালিকানা দাবি করে আসছে। প্রতিবেশী অনেক দেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের তাতে আপত্তি আছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়ছেই।
ওই অঞ্চলে চীনবিরোধী অংশকে সমর্থন তথা মদদ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কয়েক সপ্তাহ আগে তারা যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অকাস নামের নতুন একটি নিরাপত্তা জোট করেছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পারমাণবিক শক্তিধর সাবমেরিন বানানোর প্রযুক্তি পাবে অস্ট্রেলিয়া।
এই জোট যে চীনকে আটকাতে, তা সবার কাছেই পরিষ্কার। এর পাল্টা হিসেবে তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান উড়িয়ে বেইজিং তার নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছে। তাইওয়ান প্রণালীর আশপাশে শান্তি বিঘ্নিত হয় এমন পদক্ষেপে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান।
তাইওয়ান রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত কি-না, এ প্রশ্নে সুলিভান বলেন, 'সেই দিন যেন কখনোই না আসে, তা এড়ানোর চেষ্টায় এখন আমরা পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছি।'
তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ দাবি করে আসছে। অন্যদিকে চীন স্বশাসিত দ্বীপটিকে 'বিচ্ছিন্ন প্রদেশ' হিসেবে বিবেচনা করে। একদিন দুটি ভূখণ্ড ফের একত্রিত হবে বলে প্রত্যাশা করে বেইজিং। এজন্য প্রয়োজন পড়লে বল প্রয়োগ করার হুমকিও দিয়ে রেখেছে তারা।
বুধবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, চীন ২০২৫ সালের মধ্যে পুরোদমে আগ্রাসন চালানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।