
স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে। এর আগে অনিয়ম-দুর্নীতি করেছে এমন ব্যক্তিরা যেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পান, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার।
অতীতে লক্ষ্য করা গেছে, নির্বাচিত হয়ে অনেক জনপ্রতিনিধি অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তাদের এমন কুপ্রবৃত্তির কারণে জনসেবার রাজনীতি রীতিমতো লোভের দাসে পরিণত হয়েছে। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যদি জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনে ব্যস্ত থাকেন তাহলে জনগণ যাবে কোথায়? আমরা জানি, রাষ্ট্রীয় নানা সেবা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করে আসছে। কিন্তু সরকারের এ উদ্দেশ্য কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে? যাদের মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে তারা কি জনসেবা করছেন?
গত ৮ জুলাই একটি দৈনিকের শিরোনাম- 'খুন মাদক বাণিজ্য চাঁদাবাজিতে তৃণমূল জনপ্রতিনিধিরা'। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা জড়িয়ে পড়ছেন নানা অনিয়ম ও গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সেবা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত অনেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বার বর্তমানে নিজ নিজ এলাকায় হয়ে উঠেছেন মূর্তিমান আতঙ্ক। তৃণমূলের এসব জনপ্রতিনিধি খুন, অস্ত্র, মাদক বাণিজ্য, বালুদস্যুতাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ভয়াবহ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন। অনেক জনপ্রতিনিধি গ্রাম্য সালিশের নামে নিজ নিজ এলাকায় কায়েম করেছেন ঘুষের রাজত্ব।'
এমন একটি প্রতিবেদন পড়ার পর প্রশ্ন আসতে পারে- এরা কেমন জনপ্রতিনিধি। আর যদি জনপ্রতিনিধি হয়েই থাকেন তাহলে এমন কাজ করতে পারেন কী করে? চেয়ারম্যানরা দলীয়। তারা নিজ দলের ব্যানারে নির্বাচিত, আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপি যাই হোক। দলের সক্রিয় নেতাকর্মী ছাড়া কেউ মনোনয়ন পাননি বলেই মনে হয়। আর অন্যভাবে কেউ মনোনয়ন পেয়ে থাকলে তা ভিন্ন কথা। মনোনয়ন দেওয়ার আগে সেই ব্যক্তি নিয়ে যাচাই-বাছাই করে নিলে এমন অভিযোগ নাও উঠতে পারত।
ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে এসে যদি টাকা গুনতে হয়, দুস্থ মাতা, ভিজিএফ, ভিজিডি নিতে যদি ঘুষ দিতে হয় তাহলে দারিদ্র্য বিমোচন হবে কী করে? গ্রামীণ প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা যদি চেয়ারম্যান, মেম্বার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পকেটে যায়, তাহলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন হবে কী করে? এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন যদি তাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করে তাহলে দুর্নীতি অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।
অতীতে যারা দুর্নীতি করেছেন, তারা যেন কোনোভাবেই দলীয় নমিনেশন না পান, সে ব্যবস্থা নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। তা না হলে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা কঠিন হবে। এর আগে যেসব চেয়ারম্যান-মেম্বার অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হয়েছেন, তারাও যে কোনো মূল্য মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা যদি পুনরায় নির্বাচিত হন, তাহলে তারা ফের বীরদর্পে লুটপাট করবেন, এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব আরও মজবুত করবেন।
আসন্ন নির্বাচনে যদি রাজনৈতিক দলগুলো উপযুক্ত ব্যক্তিদের চেয়ারম্যান করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সামনে ঘোর অন্ধকার অপেক্ষা করছে। এতে পিছিয়ে পড়া বিপুল জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তাও ভেস্তে যাবে অনেকাংশে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন যেহেতু রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে; তাই চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির দায় অনেকাংশে রাজনৈতিক দলের কাঁধে চলে যায়। সেই দল সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে সেই দল ভোটের মাঠে ক্ষতিগ্রস্ত হবে- এমন আশঙ্কা অমূলক নয়।
রবীন্দ্রস্মৃতি সংগ্রাহক ও গবেষক
অতীতে লক্ষ্য করা গেছে, নির্বাচিত হয়ে অনেক জনপ্রতিনিধি অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তাদের এমন কুপ্রবৃত্তির কারণে জনসেবার রাজনীতি রীতিমতো লোভের দাসে পরিণত হয়েছে। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যদি জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনে ব্যস্ত থাকেন তাহলে জনগণ যাবে কোথায়? আমরা জানি, রাষ্ট্রীয় নানা সেবা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করে আসছে। কিন্তু সরকারের এ উদ্দেশ্য কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে? যাদের মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে তারা কি জনসেবা করছেন?
গত ৮ জুলাই একটি দৈনিকের শিরোনাম- 'খুন মাদক বাণিজ্য চাঁদাবাজিতে তৃণমূল জনপ্রতিনিধিরা'। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা জড়িয়ে পড়ছেন নানা অনিয়ম ও গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সেবা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত অনেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বার বর্তমানে নিজ নিজ এলাকায় হয়ে উঠেছেন মূর্তিমান আতঙ্ক। তৃণমূলের এসব জনপ্রতিনিধি খুন, অস্ত্র, মাদক বাণিজ্য, বালুদস্যুতাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে ভয়াবহ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন। অনেক জনপ্রতিনিধি গ্রাম্য সালিশের নামে নিজ নিজ এলাকায় কায়েম করেছেন ঘুষের রাজত্ব।'
এমন একটি প্রতিবেদন পড়ার পর প্রশ্ন আসতে পারে- এরা কেমন জনপ্রতিনিধি। আর যদি জনপ্রতিনিধি হয়েই থাকেন তাহলে এমন কাজ করতে পারেন কী করে? চেয়ারম্যানরা দলীয়। তারা নিজ দলের ব্যানারে নির্বাচিত, আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপি যাই হোক। দলের সক্রিয় নেতাকর্মী ছাড়া কেউ মনোনয়ন পাননি বলেই মনে হয়। আর অন্যভাবে কেউ মনোনয়ন পেয়ে থাকলে তা ভিন্ন কথা। মনোনয়ন দেওয়ার আগে সেই ব্যক্তি নিয়ে যাচাই-বাছাই করে নিলে এমন অভিযোগ নাও উঠতে পারত।
ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে এসে যদি টাকা গুনতে হয়, দুস্থ মাতা, ভিজিএফ, ভিজিডি নিতে যদি ঘুষ দিতে হয় তাহলে দারিদ্র্য বিমোচন হবে কী করে? গ্রামীণ প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা যদি চেয়ারম্যান, মেম্বার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পকেটে যায়, তাহলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন হবে কী করে? এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন যদি তাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করে তাহলে দুর্নীতি অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।
অতীতে যারা দুর্নীতি করেছেন, তারা যেন কোনোভাবেই দলীয় নমিনেশন না পান, সে ব্যবস্থা নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। তা না হলে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা কঠিন হবে। এর আগে যেসব চেয়ারম্যান-মেম্বার অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হয়েছেন, তারাও যে কোনো মূল্য মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা যদি পুনরায় নির্বাচিত হন, তাহলে তারা ফের বীরদর্পে লুটপাট করবেন, এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব আরও মজবুত করবেন।
আসন্ন নির্বাচনে যদি রাজনৈতিক দলগুলো উপযুক্ত ব্যক্তিদের চেয়ারম্যান করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সামনে ঘোর অন্ধকার অপেক্ষা করছে। এতে পিছিয়ে পড়া বিপুল জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তাও ভেস্তে যাবে অনেকাংশে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন যেহেতু রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে; তাই চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতির দায় অনেকাংশে রাজনৈতিক দলের কাঁধে চলে যায়। সেই দল সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে সেই দল ভোটের মাঠে ক্ষতিগ্রস্ত হবে- এমন আশঙ্কা অমূলক নয়।
রবীন্দ্রস্মৃতি সংগ্রাহক ও গবেষক
বিষয় : অন্যদৃষ্টি এম মতিউর রহমান মামুন
মন্তব্য করুন