ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জব্দ পাহাড়ি বালু বেচে দিলেন বন কর্মকর্তা

জব্দ পাহাড়ি বালু বেচে দিলেন বন কর্মকর্তা

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক। ছবি: সংগৃহীত

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ২১:৩৮

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হকের বিরুদ্ধে জব্দ করা পাহাড়ের বালু বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, ২০২০ সালে পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের সংগ্রামের জুমে স্থানীয় শাকের উল্লাহর নেতৃত্বে একটি বালু সিন্ডিকেট পাহাড় কেটে দুটি বিশাল বালুর স্তূপ তৈরি করে। উপজেলা প্রশাসন তা জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০ লাখ ঘনফুট বালু জব্দ করে বন বিভাগের জিম্মায় দেয়। গত ফেব্রুয়ারিতে শাকের উল্লাহ ও আবদুল জলিল নামে দুই ব্যক্তির কাছে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ওই বালু বিক্রি করেন হাবিবুল হক। 

টৈটং বনকানন এলাকার বাসিন্দা জাকের হোসেনের ভাষ্য, জব্দ করা বালু গত বছরের শুরুর দিকে বিক্রি করে দিতে চেষ্টা করেন রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল। কিন্তু দরদামে মিল না হওয়ায় এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতে পারায় তখন বিক্রি করতে পারেননি। সম্প্রতি ওই বন কর্মকর্তা স্থানীয় বালু সিন্ডিকেটের দুই ব্যবসায়ীর কাছে ১৫ লাখ টাকায় দুটি বালুর স্তূপ বিক্রি করে দিয়েছেন। 

অভিযোগ অস্বীকার করে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক দাবি করেন, স্থানীয় কিছু পাহাড়খেকো ব্যক্তি তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এসব বলছে। 

বালুর স্তূপগুলো কোথায় গেল– এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি এখন কিছু বলতে পারবেন না। এ বিষয়ে তথ্য দিতে হলে তাঁকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বনাঞ্চলের কোনো সম্পদ কারও বিক্রি করার অধিকার নেই। যদি কেউ এমন কোনো কাজ করে থাকে, তাহলে তা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়ে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। 

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, টৈটং ইউনিয়নের বনাঞ্চলে পাহাড় কাটা তিনটি বালুর বড় স্তূপ জব্দ ছিল বলে তিনি জানতে পেরেছেন। কিন্তু সরেজমিন মাত্র একটি বালুর স্তূপ পেয়েছেন। বাকি দুটি বালুর স্তূপ কোথায় গেল– সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাইবেন। তবে বিষয়টি যেহেতু বন বিভাগের, সেহেতু তারাই এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি আশাবাদী।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল বলেন, পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংসকারীরা বালু তুলবে। আবার সে বালু জব্দ করে চড়া দামে তাদের কাছে বিক্রি করবে বন বিভাগ। রক্ষক সেজে বনের সম্পদ ভক্ষণ করা ব্যক্তিদের এসব দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অপসারণ জরুরি হয়ে উঠেছে। 

আরও পড়ুন

×