ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

ছাদেই এক টুকরো বাগান

ছাদেই এক টুকরো বাগান

ছাদবাগানে চিকিৎসক দম্পতি সমকাল

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২২:৫০

চিকিৎসক বন্ধু নাহিদ বনসাই তৈরি করতেন। সহকর্মী মামুন ভাই ছাদবাগান করতেন। তাদের দেখে ভাড়া বাসাতেই বাগান শুরু। এখন নিজ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন এক টুকরো বাগান। রয়েছে আড়াইশ প্রজাতির গাছ। এর মধ্যে ৮০ ভাগই বনসাই। বাড়ির ছাদজুড়ে গড়ে 
উঠেছে বনসাই ‘রাজ্য’। নানা ধরনের গাছ আর পাখির কিচিরমিচির শব্দে ছাদটি যেন একখণ্ড সবুজ বনানি। 
খুলনার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আমিরুল খসরু ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. আফরোজা খানম দম্পতি নিজের বাড়ির ছাদে করেছেন এমন আয়োজন। দুই যুগেরও বেশি আগে ভাড়া বাসায় ছাদবাগানের শুরু তাদের। বর্তমানে নগরীর আহসান আহমেদ রোডে নিজ বাড়িতে দৃষ্টিনন্দন এই ছাদবাগানে রয়েছে ১ হাজার ৮শরও বেশি গাছ। ৫ হাজার বর্গফুটের বাগানে ঠাঁই হয়েছে শতবর্ষী বটের বনসাই। রয়েছে বট, অশ্বত্থ, পাকুড়, আম বট, ফাইকাচ ভ্যারাইটি, শিমুল, হিজল, তমাল, গাব, পেয়ারা, এলাচি লেবু, কতবেল, রঙ্গন, বাগানবিলাস, আম, নারকেল, কুল, রুবি লঙ্গান, খই ফল, দেশি তেঁতুল, উইপিং তেঁতুল, কাঞ্চন, এডেনিয়ামসহ বিভিন্ন প্রজাতির বনসাই। দৃষ্টিনন্দন ও দুর্লভ আফ্রিকার প্রজাতির খেজুর গাছটির বয়স হয়েছে ২০ বছর। এর শিকড়ের বেশির ভাগ অংশই মাটির ওপরে দৃশ্যমান।
ছাদবাগানের নিয়মিত পরিচর্যা করেন চিকিৎসক দম্পতি। পানি দেওয়া, আগাছা বাছাই ও মাটি পাল্টানোর জন্য দু’জন কর্মচারী আছেন। খুলনা নগরী ও ফুলতলার বিভিন্ন নার্সারি, যশোর ও ভারত থেকেও সংগ্রহ করেছেন বিভিন্ন প্রজাতির চারা। বাদ জায়নি সাভার ও আশুলিয়ার নার্সারিও। এ দম্পতির বটিয়াঘাটায়ও একটা বাগানবাড়ি রয়েছে।  সেখানেও রয়েছে নানা প্রজাতির বড় গাছ। পেয়ারা, আম, ডালিম, লেবু, মালটা প্রভৃতি গাছে নিয়মিত ফল হয়।
ডা. আমিরুল খসরু বলেন, একেকজনের একেক ধরনের শখ থাকে। আমার শখ  বাগান করা। তবে বনসাইয়ের প্রতি ঝোঁকটা একটু বেশি।
ঢাকায় বনসাই মেলা হলে সেখানে যাই। দেশের বাইরের গেলেও বনসাই মেলা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঢুঁ মারি। বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছ ও পরিচর্যার যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করি। দু’জনই চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। এখন ছাদবাগানে বেশি সময় দিতে পারি। এতে শরীরটাও ভালো থাকে। এ ছাড়া প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্যও বাগান করি। এখান থেকে অক্সিজেন আসে, কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়, কিছু ফল পাওয়া যায়। নিজের গাছের একটা ফল পেড়ে খাওয়ার আনন্দ বাজারে ১০ কেজি ফলেও পাওয়া যায় না। ছাদে এলে মন ভালো হয়ে যায়। বাসায় কেউ এলে 
তাদেরও দেখে মন ভালো হয়ে যায়। মানসিক প্রশান্তি মেলে। 
ডা. আফরোজা খানম বলেন, গাছের প্রতি ভালোবাসা ছোটবেলা থেকেই। নিজেদের বাড়ি ছিল না; ভাড়া বাসাতেই বাগান শুরু করি। বাড়ির মালিক বিরক্ত হতেন, আপত্তি করতেন। এখন আর সেই সমস্যা নেই। বয়স হয়েছে। সব সময় বাইরে যেতে পারি না। অবসর সময়ে ছাদে আসি। বাগানে পাখি, প্রজাপতি ও মৌমাছি আসে। ভালো লাগে। বিনোদন হয়।  প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটালে মনটাও প্রফুল্ল থাকে।

আরও পড়ুন

×