ভিত্তিপ্রস্তরের বলি হতে যাচ্ছে বিরল উদ্ভিদ
![ভিত্তিপ্রস্তরের বলি হতে যাচ্ছে বিরল উদ্ভিদ ভিত্তিপ্রস্তরের বলি হতে যাচ্ছে বিরল উদ্ভিদ](https://samakal.com/media/imgAll/2025January/untitled-11-1736536930.jpg)
ফাইল ছবি
কুবি সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:২২
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন ভিত্তিপ্রস্তর পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সেই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের বলি হতে যাচ্ছে ক্যাসিয়া জাভানিকা বা লাল সোনাইল নামক বিরল বৃক্ষ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন পরিবেশবাদী শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া প্রশাসন বরাবর চিঠি দিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।
জানা গেছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) রাস্তা প্রশস্তকরণ শুরু হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নাম সংবলিত ভিত্তিপ্রস্তরটি ভেঙে ফেলে প্রশাসন। এরপর বিভিন্ন সময় ভিত্তিপ্রস্তর পুনঃস্থাপনের বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে উঠে এলেও তাতে সায় দেয়নি প্রশাসন। তবে আওয়ামী সরকারের পতনের পর ভিত্তিপ্রস্তরটি পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে অনুযায়ী কুবির প্রবেশপথের লাল সোনাইল গাছ থেকে সিওইউ চত্বর বরাবর সিঁড়ি তৈরি করে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। এ জন্য লাল সোনাইল গাছের কয়েকটি ডাল কেটে ফেলা হয়েছে এবং গাছটি স্থানান্তর করতে চারপাশের মাটি সরিয়ে ফেলা হয়। পরে অবশ্য শিক্ষার্থীদের বাধায় গাছের গোড়ায় আবার মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।
এদিকে লাল সোনাইল গাছ স্থানান্তর না করে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিকল্প পথ অনুসরণের দাবি জানিয়েছে অভয়ারণ্য। এ বিষয়ে সংগঠনটির সহসভাপতি রঞ্জন ভৌমিক, বিএনসিসির প্লাটুনের ক্যাডেট আন্ডার অফিসার সামিন বখশ সাদী ও সাইফুল ইসলাম নামে শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সামিন বখশ সাদী জানান, ২০২২ সালে কুবি বিএনসিসি প্লাটুনের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক-সংলগ্ন রাস্তার দুই পাশে বিরল প্রজাতির লাল সোনাইল গাছের ২০টি চারা রোপণ করা হয়। দুই বছরের মধ্যে গাছগুলোতে ফুল ফোটে, যা শিক্ষার্থীদের মুগ্ধ করে। গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, ‘একটি গাছ বেড়ে ওঠার পেছনে অনেক পরিশ্রম ও সময় ব্যয় করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই, গাছগুলো স্থানান্তর না করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিকল্প পন্থা গ্রহণ করুন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লাল সোনাইল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া জাভানিকা। বাংলাদেশে এই গাছ খুব একটা সহজলভ্য নয়। এটি শুধু শোভাবর্ধনের জন্য নয়, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, ‘আমি চেয়েছি বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসকে একটু একটু করে সাজিয়ে তুলতে। গাছগুলোকে পরিকল্পনামাফিক লাগানো হয়েছে; যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সে জায়গা থেকে এ ধরনের স্থাপত্যিক কাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রে, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গাছ কেটে এটা বানানো দেখতেও অসুন্দর লাগছে।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান নির্বাহী এস.এম. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এটার কমিটি আছে। কমিটি কাজ করছে।’
প্রতিষ্ঠাকালীন ভিত্তিপ্রস্তর পুনঃস্থাপন প্রকল্প কমিটির আহ্বায়ক ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এমএম শরিফুল করিমের ভাষ্য, এটি আপাতত স্থগিত আছে। শনিবার সরেজমিন গিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
- বিষয় :
- ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন