ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির ছায়া সংসদ
ফায়ার সার্ভিস ভবনে হামলার ঘটনা দুঃখজনক

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেরি চেয়ারম্যান। ছবি-সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৩ | ১২:৫৩ | আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ | ১৩:৪৯
‘বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস ভবনে হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ হামলায় ১৪টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। যার প্রতিটির মূল্য ৮ কোটি টাকা। এ ঘটনায় সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, মশার কয়েল, সিগারেট ও চুলার আগুনসহ সচেতনতার অভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়ছে। উৎসুক জনতার ভিড় ও পানির উৎসের অভাবের কারণে অগ্নি নির্বাপণ ব্যাহত হয়। ভবন নির্মাণে ২ শতাংশ অগ্নি নিরাপত্তার জন্য ব্যয় করলে অগ্নি ঝুঁকি কমানো সম্ভব। অগ্নি নির্বাপণে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস বিশ্বমানের সরঞ্জাম ব্যবহার করছে।’
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংস্থা ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেরি চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমাদের অগ্নি দুর্ঘটনা নিয়ে আতঙ্ক আছে, কিন্তু সচেতনতা নেই। নেই তেমন কোনো সরকারি-বেসরকারি সঠিক উদ্যোগ। ঢাকা শহরের ৯৮ শতাংশ বিপণী বিতানে অগ্নিঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা নেই। কোন রকম নিয়মনীতি না মেনেই গড়ে উঠেছে উপানুষ্ঠানিক মার্কেটগুলো। কিছু কিছু মার্কেটে লোক দেখানো ফায়ার এস্টিংগুইশার, পানি রিজার্ভ ট্যাংক, বালুর বালতি, রেসকিউ সিঁড়ি থাকলেও বড় কোন অগ্নি দুর্ঘটনা মোকাবিলায় তা মোটেই পর্যাপ্ত নয়।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিম্নের ১০ দফা সুপারিশ প্রদান করেন ১. আগুন লাগা প্রতিরোধসহ যেকোনো ধরণের দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে, বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একটি রোড ম্যাপ তৈরি করা। ২. ২০১০ সালের প্রস্তাবিত বিল্ডিং কোড ১৩ বছর পর পাশ হয়েছে ২০২২ সালে। ইতোমধ্যে প্রযুক্তিগত আরও বেশ উৎকর্ষ ঘটেছে। তাই বর্তমান বিল্ডিং কোড সময় উপযোগী করে আধুনিকীকরণের পদক্ষেপ নেওয়া। ৩. বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে শুধু নোটিশ নয়, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা দেয়া। ৪. অগ্নি নির্বাপক সংস্থাগুলোর বিদ্যমান কাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি আধুনিক ফায়ার ইঞ্জিন, ওয়াটার হাইড্রেন্ট, উন্নত অগ্নি নির্বাপণ সরঞ্জাম সরবরাহ করা। ৫. রাজউক কর্তৃক ভবন ব্যবহারের সনদ না দেওয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন সংযোগ প্রদান না করা ৬. অগ্নি নির্বাপণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের ঝুঁকিভাতা আরও বাড়িয়ে ঝুঁকিভাতা নীতিমালা প্রণয়ন করা। ৭. পেশাগত দায়িত্ব পালনে ফায়ার সার্ভিসের যেসব কর্মীরা আহত অথবা নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। ৮. মিরপুরে ফায়ার সর্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের হাসপাতালের জন্য তৈরি হওয়া ভবন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা সুবিধা ও জনবল নিয়োগ করে দ্রুত চালু করা। ৯. ব্যবসায়ী সমিতি ও ভবনমালিক সমিতির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে অগ্নি ঝুঁকি হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। ১০. অগ্নি নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসন বিষয়ক তথ্যচিত্র গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার করা।
‘ভবন ব্যবহারকারীদের অসচেতনতাই অগ্নি দুর্ঘটনার প্রধান কারণ’ শীর্ষক ছায়া সংসদে বিরোধী দল স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশেকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় সরকারি দল প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন-অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক মোরছালীন বাবলা, সাংবাদিক সবুজ ইউনুস ও সাংবাদিক ফারাবী হাফিজ। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি