রপ্তানি আয়ের তথ্যে ঘাটতি নেই, দাবি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর

ছবি: সমকাল
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪ | ১৯:৫৭ | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ | ২০:০১
বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পণ্য রপ্তানি আয়ের পরিসংখ্যানে গরমিল দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮১ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। তবে রপ্তানির এ তথ্যে কোনো ত্রুটি বা ঘাটতি নেই বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তথ্য পরিবেশনে পার্থক্য থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি অডিটোরিয়ামে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, রপ্তানির তথ্যে কোনো ত্রুটি বা ঘাটতি নেই; তবে পরিবেশনে পার্থক্য থাকতে পারে। তথ্য সংগ্রহ ও পরিবেশনের এই পার্থক্যকে ভুল বলা যায় না। ইপিবি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে তথ্য নিয়ে রপ্তানি পণ্যের মূল্য হিসেব করে। এনবিআরে রপ্তানির তথ্য নথিভুক্ত হওয়ার পরেও অনেক সময় ক্রয়াদেশ বাতিল, জাহাজিকরণে বিলম্ব কিংবা পেমেন্ট (রপ্তানি আয়) দেশে আসতে সময় লাগে। এসব তথ্য পরে সমন্বয় করতে হয়। ফলে এ ধরনের বিষয়ের কারণে তথ্যে পার্থক্য হতে পারে। তবে এটাকে ভুল তথ্য বলা যায় না।
এরপরেও তথ্যে যেন কোনো বিভ্রাট না হয়, সে জন্য ইপিবি কাজ করছে বলে জানান আহসানুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইপিবি এখন থেকে সরাসরি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সমিতি, এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে। এভাবে একটি তথ্যভান্ডার করা হবে। এরপর নির্মোহভাবে সেই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হবে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গত বৃহস্পতিবারের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই থেকে গত মে পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ৭৩ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ কম। যদিও ইপিবি গত মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বরাত দিয়ে প্রকাশ করা তথ্যে দাবি করে, ১১ মাসে (জুলাই-মে) রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ এ দুই সংস্থার তথ্যে রপ্তানি আয়ে গরমিল দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮১ কোটি ডলার। শুধু গত অর্থবছরেই নয় বরং গত ১০ বছরে দুই সংস্থার তথ্যে গড়মিল দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
এর আগে পণ্য রপ্তানির তথ্যে গরমিলের বিষয়টি ৩ জুলাই সামনে আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারা বলেছে, এত দিন ইপিবির পরিসংখ্যান ধরে রপ্তানির হিসাব করা হতো। তবে সে অনুযায়ী দেশে রপ্তানি আয় আসছিল না। এ নিয়ে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
গরমিল সংশোধনের পর রপ্তানি আয় কমলে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার কমতে পারে। মাথাপিছু আয়, মাথাপিছু জিডিপিসহ সংশ্লিষ্ট সব খাতেই এর প্রভাব পড়তে পারে। তাই ভুল তথ্যের ভিত্তিতে যেসব হিসাব করা হয়েছে, তা সব ক্ষেত্রেই পর্যালোচনা করা উচিত মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
- বিষয় :
- বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
- রপ্তানি আয়
- তথ্য ঘাটতি