ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

জমি হারিয়ে জঙ্গলে ১৭ বছর, স্বপ্ন দেখেন ঘরে ফেরার

জমি হারিয়ে জঙ্গলে ১৭ বছর, স্বপ্ন দেখেন ঘরে ফেরার

চন্দ্রশেখরের সঙ্গী অ্যাম্বাসাডর আর সাইকেল। ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২১ | ১০:৩৬ | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২১ | ০৪:৫১

গ্রামে দেড় একরের একটি চাষের জমি ছিল চন্দ্রশেখরের। সেখানে সুপারি চাষ করতেন তিনি। ২০০৩ সালে চাষের জন্য ব্যাংক থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ে শোধ করতে পারেননি। এর পরই তার জমি বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংক। সেই দুঃখে, রাগে ঘর ছাড়েন তিনি। নিজের অ্যাম্বাসাডর চালিয়ে বোনের বাড়ি গিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সেখানেও ঠাঁই হয়নি তার। তারপর আশ্রয় নেন গ্রামের পাশে জঙ্গলে। সেখানেই বসবাস করছেন ১৭ বছর ধরে। 

জঙ্গলে সম্পত্তি বলতে তার একটি অ্যাম্বাসাডর আর একটি সাইকেল। অ্যাম্বাসাডরের উপর কালো প্লাস্টিক দিয়ে ছাউনি করে বানিয়েছেন নিজের ঘর। আপন করে নিয়েছেন জঙ্গলের বন্যপ্রাণীদের। তাই ১৭ বছরে একবারও হামলার শিকার হতে হয়নি তাকে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। 

এমনকি জঙ্গলে এভাবে আশ্রয় নেওয়া বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও বন দফতর তাকে কিছু বলে না। কারণ, চন্দ্রশেখর কোনও প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করেন না। পেট চালানোর জন্য জঙ্গলের শুকিয়ে যাওয়া লতা দিয়ে ঝোড়া বানান। পাশের গ্রামের বাজারে সেই ঝোড়া বিক্রি করে চাল, ডিল, সব্জি কিনে আনেন তিনি। কখনও ঝরে পড়া ফল খেয়ে নেন। কোনও প্রাণীকে হত্যাও করেননি। বন দফতর তাই তাকে জঙ্গলের রক্ষক বলে মনে করে।

জঙ্গলে ‌১৭ বছর থেকেও নিজের লক্ষ্য থেকে পিছুপা হননি তিনি। জমির কাগজপত্র সব এখনও নিজের কাছে গুছিয়ে রেখেছেন। ঝোড়া বেচে অল্প অল্প করে টাকা জমাচ্ছেন। তার জীবনের একটিই লক্ষ্য, জমি এক দিন ফেরাতেই হবে।

চন্দ্রশেখরের কোনও আধার কার্ড নেই। কিন্তু পরিচিতির জন্যই পাশের গ্রামের পঞ্চায়েত থেকে তাকে কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জঙ্গলের মধ্যে হেঁটে গিয়ে তাকে করোনার টিকা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

×