ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েক মিনিট

সৌদিতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েক মিনিট

রেড সি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল চত্বর। ছবি: সমকাল

অনিন্দ্য মামুন, জেদ্দা থেকে

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৫:১৩

গায়ে কালো রঙের পোলো শার্ট। মাথায় কালো ক্যাপ। পরনের প্যান্টও কালো। পোলো শার্টের বুক বরাবর লাল রঙে লেখা রেড সি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভাল। কিন্তু জামাতে কি লেখা সেটাতে তাদের নজর দেওয়ার সময় নেই। দিনভর তাদের ব্যস্ত থাকতে হয় কাজ নিয়ে। অর্থাৎ সৌদির বন্দর নগরী জেদ্দায় যে চতুর্থতম রেড সি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে তারা নিয়োজিত আছেন।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতার কাজেই সময় চলে যায় তাদের। আশ্চর্যের বিষয় হল, দিনভর ফেস্টিভ্যালের এই রঙিন দুনিয়ায় তারা ঘুরে বেড়ালেও তারা জানেন না এখানে কি হচ্ছে, আয়োজনটাই বা কীসের!

দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি হয়ে এই ফ্যাস্টিভালে পাঁচদিন হল অংশ নিয়েছি। প্রতিদিন গেট দিয়ে প্রবেশের সময় এই পরিচ্ছতাকর্মীরা আড় চোখে তাকান। কিছু না দেখার ভান করেন তারা। চোখে মুখে যেনও ভয়, সংকোচ আর কৌতূহল। দৈহিক গঠন দেখে মঙ্গলবার একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার বাড়ি কি বাংলাদেশে?

বেশ হ্যান্ডসাম ছেলেটি হেসে উত্তর দিলেন, হ্যাঁ।। বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর আমার বাড়ি। তার সঙ্গে বাংলায় কথা বলতে দেখায় আরও ছুটে এলেন চার-পাঁচজন। এসে বললেন, তাহলে তো আপনি আমাদের দেশি।

সৌদি সরকারের অর্থায়নে শতাধিক দেশের সিনেমা এই ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে সৌদি সরকার ফিল্ম নিয়ে দারুণ কিছু করার করার চেষ্টা করছে। সেখান থেকে জিয়াদ নামের একজন জিজ্ঞাসা করলেন, আমাদের বাংলাদেশ থেকে কেউ আসেনি? জানালাম, মেহজাবীন এসেছে। শুনে খুব আফসোস করলেন সবাই। তাদের প্রিয় অভিনেত্রী এসেছেন অথচ একবারও দেখার সুযোগ হল না!

ফেস্টিভ্যালের একেবারে সম্মুখভাগের তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তাই তাদের ডেকে পাশে নিয়ে এলাম। বিস্তারিত কথা বলতে চাই ওদের সঙ্গে। এখানে কেমন আছেন, কাজের সুযোগ-সুবিধা কেমন জানতে চাই। শ্রমিক আইন কতটা মানছেন তাদের মালিক। কিন্তু তারা জানান, বেশিক্ষণ কথা বলতে পারবে না। তাদের মালিক দেখলে বিপদ আছে! তবে ছবি তোলা বা ছবি প্রকাশ করা যাবে না। এটা তাদের কফিল বা প্রতিষ্ঠানের মালিকের চোখে পড়লে তাদের কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেবে। তাই ছবি না তোলার শর্তেই কথা বলি তাদের সঙ্গে।

তারা জানান, জেদ্দার এই আল বালাদ শহরে হাজার হাজার বাংলাদেশি। রয়েছে পাকিস্তানি ও ভারত থেকে আসা শ্রমিকরাও। তারা একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। সেই কোম্পানি থেকেই তাদের এই ফেস্টিভ্যালের ক্লিনারের কাজের জন্য পাঠানো হয়েছে। ১৪ দিন কাজ করলে চার হাজার রিয়াল দেবে। তা থেকে তাদের যে ব্রোকার নিয়োগ দিয়েছেন তিনি অর্ধেক রেখে দেবেন। 

ঠিক তখনই আরেকজন বাংলাদেশি ডাকতে আসেন তাদের। সেই ডাকে ছুটতে হয় তাদের। আমিও ছুটি প্রেসবক্সের দিকে। একটু পর রণবীর সিং আসবেন। সেই সেশনে অংশ নিতে হবে।

আরও পড়ুন

×