ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

সা ক্ষাৎ কা র

বাংলাদেশকে পথ দেখালেন গিলেস্পি

বাংলাদেশকে পথ দেখালেন গিলেস্পি

কোচিংয়ে নামা সাবেক অজি ক্রিকেটার জেসন গিলেস্পি।

সেকান্দার আলী

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ | ২২:১২

কোচ জেসন গিলেস্পির খুব ব্যস্ত সময়। বিশ্বকাপের ভেতরের লিস্ট-এ ম্যাচ খেলতে হচ্ছে প্রাদেশিক দলগুলোকে। সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলটাকে নিয়ে গিলেস্পি ছোটেন এক ভেন্যু থেকে অন্য ভেন্যুতে। এই ব্যস্ততার মধ্যেও অ্যাডিলেড ওভালের ২ নম্বর মাঠে দলের অনুশীলনের আগে সময় দিলেন। বাংলাদেশ সফরের স্মৃতিচারণ, টি২০-তে সাকিবদের করণীয় এবং ক্রিকেট রোমাঞ্চ নিয়ে আবেগের ঝুলিটা খুলে দিয়েছিলেন। অ্যাডিলেডে জেসন গিলেস্পির সঙ্গে ২০ মিনিটের আড্ডা থেকে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত তুলে এনেছেন

সমকাল :২০০৬ সালে বাংলাদেশ সফরের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। চট্টগ্রাম টেস্টে দ্বিশতক করেছিলেন।

গিলেস্পি :বাংলাদেশ নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি। অসম্ভব সুন্দর একটি দেশ। মানুষগুলো খুবই ভালো। আমার টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে সেখানে। ওই সিরিজে রান পাওয়াটা ছিল দারুণ ব্যাপার। সেদিক থেকে বাংলাদেশে আমার খুবই ভালো স্মৃতি রয়েছে। আমি এখন কোচ, নতুন ভূমিকায়। সময়ের সঙ্গে সবই বদলায়। আমাকেও নতুন রোল নিতে হয়েছে। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সঙ্গে খেলোয়াড়ি জীবনের রোমাঞ্চকর কিছু স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

সমকাল :শেষ টেস্টে এত ভালো ব্যাটিং করার পেছনে কী মোটিভেশন ছিল?

গিলেস্পি :রিকি পন্টিং অধিনায়ক ছিল। সে বলছিল কিছু রান করতে। মাইক হাসির সঙ্গে আমার ভালো একটি জুটি হয়। সত্যিই খুব উপভোগ করেছি। ক্যারিয়ারের শেষটা অত ভালো হলে কার না ভালো লাগে। ব্যাটিং গড় বাড়িয়ে দিয়েছে অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংসটি। সত্যি বলতে, দারুণ একটা অভিজ্ঞতা। আমি কিন্তু সাধারণ গেম প্ল্যান নিয়েই খেলেছি। বিশেষ কিছু করতে হবে, বড় স্কোর হবে তেমন না। বাংলাদেশি বোলিং বড় ইনিংস খেলতে সাহায্য করেছে। খুব বেশি টার্ন ও বাউন্স ছিল না। একটি জিনিস মাথায় ছিল, সামনের পায়ে বল লাগলে এলবিডব্লিউ হব। আমি সেটা ভালোভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছি এবং পেরেছি।

সমকাল :গ্লেন ম্যাকগ্রার সঙ্গে আপনার জুটির পেছনে কি রসায়ন ছিল?

গিলেস্পি :আমাদের বোঝাপড়াটা খুবই ভালো ছিল। আমার খুব ভালো বন্ধু সে। আমরা খুব জোক করতাম। কে দ্রুতগতির, কে সেরা! খুব মজা হতো। খুব ভালো বোলিং করত সে। একদিকে আমি, অন্যদিকে গ্লেন বোলিং করেছে। স্পেল ধরে খুব ভালো বোলিং করত। আমরা চেষ্টা করতাম, প্রতিপক্ষ বুঝে বোলিং করতে; রান চেক দিতে। ব্যাটারদের লুজ বল কম দেওয়ার চেষ্টা করেছি। স্টাম্পে রাখার চেষ্টা থাকত। ভালো লাইন-লেন্থে বল করলে ব্যাটারের কিছু করার থাকে না। আমরা সেটাই করতাম। সত্যি বলতে, আমাদের দু'জনের বোলিং জুটি জমত।

সমকাল :গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ল অস্ট্রেলিয়া।

গিলেস্পি :এটা খুবই হতাশাজনক। অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ হচ্ছে স্বাগতিকদের ছাড়া। ফাস্ট বোলারদের সেভাবে জ্বলতে দেখিনি। হতাশাজনক একটি টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ার জন্য। এটা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। প্রতিক্রিয়া আছে। দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার ভালো খেলা উচিত ছিল। আমার মনে হয়, অস্ট্রেলিয়া টি২০ দল কিছুটা পরিবর্তন হবে। সেমিফাইনালে খেলতে না পারা খুবই হতাশাজনক।

সমকাল :কিছু স্মৃতি শেয়ার করবেন, যেটা এখনও আনন্দ দেয়?

গিলেস্পি :ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিডনি টেস্টের কথা বলতে পারি। ভারতের বিপক্ষে ভারতে টেস্ট সিরিজ জয় ছিল রোমাঞ্চকর। অস্ট্রেলিয়া ৩৫ বছর ভারতে কোনো টেস্ট সিরিজ জিততে পারছিল না। অনেক লম্বা একটা সময়। উপমহাদেশে যে কোনো দলের বিপক্ষে খেলার একটা চ্যালেঞ্জ থাকত। সেখানে রেজাল্ট পেলে ভালো লাগত। পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কায় খেলা কঠিন ছিল। কারণ, কন্ডিশন অস্ট্রেলিয়া থেকে ভিন্ন। নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের মতো নয়। তাই উপমহাদেশে কোনো ম্যাচ জিতলে সেটাকে অন্যভাবে মূল্যায়ন করতাম।

সমকাল :বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা টি২০-তে মানিয়ে নিতে পারছে না কেন?

গিলেস্পি :বাংলাদেশে অনেক ভালো ক্রিকেটার আছে। আমার কাছে মনে হয়, টি২০-তে ভালো দল তারা। কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। তারা যেটা করে ছয়-সাত ওভারের মধ্যে উইকেট হারিয়ে ফেলে। মাঝেও উইকেট ধরে রাখতে পারে না। কয়েক বলের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে ফেললে চাপে পড়বেই। বড় স্কোর হবে না। প্রথমত. নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো বন্ধ করতে হবে। ভালো দল এবং এভারেজ দলের মধ্যে পার্থক্য হলো ভালো দল কঠিন মুহূর্তে ম্যাচ বের করতে পারে। বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে। আমার মনে হয়, ঠিক পথেই আছে তারা।

সমকাল :বিপিএল বা বিসিবি থেকে অফার পেলে কাজ করবেন?

গিলেস্পি :আমি পেশাদার কোচ। কোচিং করাতে ভালোবাসি। আমি এখন সাউথ অস্ট্রেলিয়ার কোচ। এই তরুণ দলটাকে ভালো করার চেষ্টা করছি। এখন এই ছেলেদের সঙ্গেই আছি। সামনে সুযোগ এলে অবশ্যই ভাবব।

আরও পড়ুন

×