লিপু-রাজ-হান্নান ত্রয়ীর নবযাত্রা

ছবি- সংগৃহীত
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ০৯:৫০
জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেল পুনর্গঠনে স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন সিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। রোববার তিনি বললেন, নির্বাচক প্যানেলে চমক আছে। হান্নান সরকারের নাম আগে থেকে চাউর হওয়ায় নির্বাচক হিসেবে তাঁর অন্তর্ভুক্তি চমক নয়। আসল চমক লুকিয়ে ছিল প্রধান নির্বাচক পদে। বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের নবম সভা শেষে জানা গেল চমকের নাম গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।
দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ক্রিকেট থেকেই একপ্রকার বিদায় নিতে হয়েছিল যাঁকে। বিসিবির সাবেক এ পরিচালক প্রধান নির্বাচক হয়ে বোর্ডে ফিরতে পারেন, তা কল্পনাতেও ভাবেননি কেউ। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারেননি। লিপু বিসিবি ছেড়েছিলেন পরিচালক হিসেবে, ফিরছেন জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেলের প্রধান হয়ে। এতদিন যারা দূরে ঠেলে রেখেছিলেন, ভিন্ন ভূমিকায় তারাই কাছে টেনে নিলেন লিপুকে। মিনহাজুল আবেদীন নান্নু-হাবিবুল বাশার যুগের অবসান হলো লিপুর আগমনে।
খেলোয়াড়-সংগঠক দুই ভূমিকাতেই দেশের ক্রিকেটে ছাপ রেখেছেন লিপু। জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন, ম্যানেজার হিসেবে দল নিয়ে বিদেশে গেছেন। বিসিবিতে বিভিন্ন কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। নির্বাচিত পরিচালক হয়ে কাজ করেছেন ২০১২ সাল পর্যন্ত। যদিও পরবর্তী সময়ে নাজমুল হাসান পাপনের কমিটিতে জায়গা হয়নি তাঁর। খালেদ মাহমুদ সুজন নিয়েছেন সে জায়গা। এক যুগ হলো বিসিবিতে নেই তিনি।
বিপিএল, বিসিএল প্রবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা লিপু নিজের নতুন ভূমিকা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি আনন্দিত, অভিভূত। জাতীয় দল নির্বাচক প্যানেল অত্যন্ত দায়িত্বশীল একটি জায়গা। প্রধান নির্বাচকের পদটি আরও গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচক প্যানেলের সব সদস্যকে নিয়ে ভালো কাজ করার চেষ্টা করব।’
লিপুর কমিটিতে পুরোনোদের মধ্যে রয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক। জাতীয় দলের বাঁহাতি এ স্পিনার এক বছর হলো নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন। তিন সদস্যের প্যানেলের আরেকজন হলেন হান্নান সরকার। ২০১৫ সাল থেকে বিসিবির জুনিয়র নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
জাতীয় দলের সাবেক এ ক্রিকেটার প্রমোশন পেয়ে খুশি, ‘আট বছর হলো বিসিবিতে কাজ করছি। সবাই তো একটা প্রমোশন চায়। আমাকে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলের সদস্য মনোনীত করায় অত্যন্ত খুশি। বিসিবি সভাপতি পাপন ভাইকে ধন্যবাদ। আমার নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা আছে। আমি চেষ্টা করব, নিজের দায়িত্ব নিরলসভাবে পালন করতে। বয়সভিত্তিক দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করায় ক্রিকেটারদের সম্পর্কে জানাশোনা আছে। বর্তমান জাতীয় দলের অনেকে এবং পাইপলাইনের খেলোয়াড়রা বয়সভিত্তিক দল থেকেই উঠে এসেছে। আমি চেষ্টা করব, নিজের সুচিন্তিত মতামত দিয়ে অবদান রাখতে।’
রাজ্জাক-হান্নানের বয়স কম হওয়ায় মাঠে থেকে খেলা দেখে ক্রিকেটার নির্বাচন করা যতটা সহজ হবে, বর্ষীয়ান লিপুর ক্ষেত্রে ততটা হবে না। এ ছাড়া লম্বা সময় ক্রিকেটের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকায় লিপুকে নতুন করে মানিয়ে নিতে হবে বলে মনে করেন সংগঠকরা। এ ছাড়া দল নির্বাচনে আপস করার বিষয় আছে। বোর্ড সভাপতি ও প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। লম্বা সময় কাজের সুবাদে যেটা মেনে এবং মানিয়ে নিয়ে ছিলেন নান্নু-বাশাররা। এর পরও বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি সময়ের প্রধান নির্বাচক নান্নুকে বিদায় নিতে হলো। তাঁর বিদায়টা অবধারিত ছিল। তবে শুধু নির্বাচক হিসেবে হাবিবুল বাশারের বিদায়টা দুঃখজনক মনে করা হচ্ছে। এক বছরের জন্য হলেও বাশারকে প্রধান নির্বাচক করা যেত বলে পরিচালকদের অনেকে মনে করেন। যদিও বোর্ড সভায় তারা কেউই বাশারের পক্ষ নেননি।