ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

ওজন স্লিপে শুল্ক ফাঁকি

বেনাপোল বন্দরের ৫ কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে বদলি

বেনাপোল বন্দরের ৫ কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে বদলি

ফাইল ছবি

যশোর অফিস

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৩ | ১৫:০৮ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৩ | ১৫:০৮

বেনাপোল বন্দরে পণ্য আমদানিতে ওয়েব্রিজের ওজন স্লিপ জালিয়াতির ঘটনায় বন্দরের ৫ কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে কাস্টম কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় জড়িত ৮ সিএন্ডএফ এজেন্টকে শনাক্ত করলেও লাইসেন্স স্থগিত করেছে ৩ জনের।

বন্দরের যে দুই ওয়ব্রিজে ওজন স্লিপ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে তা পরীক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন বেনাপোল কাস্টম হাউজের ডিসি তানভীর আহম্মেদের (১) নেতৃত্বাধীন টিম। এই টিমের প্রধানসহ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ওয়াহিদের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।

বন্দর কর্তৃপক্ষের গঠিত ৫ সদস্যর তদন্ত কমিটির সুপারিশে তাদের বদলি করা হয়। বদলি হওয়া বেনাপোল বন্দরের কর্মকর্তারা হলেন, উপপরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম, উপপরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিম, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) রাশেদুল নজিব নাজির, সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) সাইফুর রহমান ভুঁইয়া, ট্রাফিক পরিদর্শক রোকনুজ্জামান আবেদীন ও অফিস সহায়ক রবিউল ইসলাম। গত ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের বদলি করা হয়। এরমধ্যে দুই উপপরিচালককে প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তবে বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, এ বদলি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বদলি হওয়া কর্মকর্তারা ওজন স্কেল জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, পণ্য পরীক্ষণের সময় তো কাস্টমস অফিসাররা ডিজিটাল স্কেলে ওজন নিশ্চিত করেন।

জালিয়াতির ঘটনায় যে ৩ সিএন্ডএফ এজেন্টের নাম পাওয়া গেছে তা হলো রিয়াদ এজেন্সি, সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্ট ও রহমত ইন্টারন্যাশনাল। এসব সিএন্ডএফ এজন্টের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে। তবে বাকিদের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্য বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের আগে স্কেলে ট্রাকসহ ওজন করা হয়। পণ্য আনলোড হওয়ার পর আবার খালি ট্রাক ওজন করে পণ্যের নিট ওজন নিশ্চিত করে ওজন স্লিপ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত কয়েক মাসে বেনাপোলের কয়েকটি সিএন্ডএফ এজেন্ট বন্দরের দেওয়া ওজন স্লিপ জালিয়াতি করে পণ্য খালাশ করে। এতে সরকার বিপুল টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। 

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন, স্থলবন্দর ওয়েবিজে কাস্টম হাউস প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ওজন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। পরে তাদের উপস্থিতিতে ভারতের সব ট্রাকের ওজন স্লিপ স্বাক্ষরিত হলে জালিয়াতির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যান্য স্থলবন্দরে ওয়েব্রিজে প্রতিটি পণ্যচালানের ওজন স্লিপ কাস্টমস ও স্থলবন্দরের প্রতিনিধির যৌথ স্বাক্ষরে সম্পাদিত হয়। কিন্তু বেনাপোল বন্দরে কাস্টম কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও তারা স্বাক্ষর করেন না।

বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মো. শাফায়েত হোসেন জানান, গত কয়েক মাসে বেনাপোলের কয়েকটি সিএন্ডএফ এজেন্ট বন্দরের দেওয়া ওজন স্লিপ নকল করে ওজন কম দেখিয়ে পণ্য খালাস করেছে। এই ধরণের ৭-৮টি প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করা হয়েছে। তবে জালিয়াতিতে কোন সিএন্ডএফ এজেন্ট জড়িত তা তিনি নিশ্চিত করেননি। এমনকি ঘটনার সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তারা জড়িত কি-না তা অনুসন্ধান না করায় তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।

এদিকে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, কাস্টমস ও বন্দরের মধ্যে ওয়েব্রিজের ওজন নিয়ে জটিলতার সৃষ্টির কারণে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

আরও পড়ুন

×