তাপদাহের মধ্যে ঘন কুয়াশা দেখে চক্ষু চড়কগাছ

শুক্রবার ভোরে ঈশ্বরদীতে কুয়াশা দেখা গেছে
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪ | ২০:৪৬
পাবনার ঈশ্বরদীতে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস করতে করতেই রাতে ঘুমাতে যান স্থানীয়রা। তবে সকালে উঠে চক্ষু চড়কগাছ- বাইরে যে পৌষের কুয়াশা। টানা তাপপ্রবাহের মধ্যে শুক্রবার ভোরে এমন কুয়াশা দেখে হতবাক হয়েছেন সবাই। আবহাওয়াবিদরাও স্পষ্ট করে কারণ বলতে পারেননি।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাইরে বেরিয়ে দেখেন শীতের কুয়াশা। প্রকৃতি এমন কুয়াশাচ্ছান্ন ছিল সকাল ৭টা পর্যন্ত। শহরের সাঁড়াগোপালপুর এলাকার প্রবীণ ইয়াছিন আলী প্রামাণিক বলেন, এমন গরমের দিনে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত এমন কুয়াশা বহু বছর আগে একবার দেখেছিলাম। আজ আবার দেখলাম।
অথচ বৃহস্পতিবারও ঈশ্বরদীতে ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেলেও ঈশ্বরদীতে এখনও বৃষ্টি বা মেঘ দেখা যায়নি। ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার থেকে বৃষ্টির কোনো আভাষও পাওয়া যায়নি। এরমধ্যে সকালে দেখা মিলল ঘন কুয়াশার। অবশ্য সকালে কুয়াশার পর শুক্রবার জেলায় তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। গতকাল ঈশ্বরদীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ বিষয়ে পাকশী রেলওয়ে কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতি এক ধরনের টালমাটাল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তীব্র খরতাপ ও বৃষ্টিহীনতার মধ্যে হঠাৎ ঘন কুয়াশা পড়ার এ ঘটনা জলবায়ু পরিবর্তনেরই প্রভাব।
ঈশ্বরদীতে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএসআরআই) মহাপরিচালক ড. ওমর আলী বলেন, প্রকৃতি বিরূপ হয়ে উঠেছে। চলমান খরতাপে প্রাণ-প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এক দিনের এই কুয়াশার প্রভাবে মাঠের ফসল কিংবা প্রাণ প্রকৃতির কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বলেন, একদিনের এই কুয়াশায় মাঠের ফসলে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী তাপমাত্রা পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন বলেন, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির তাপমাত্রার সময়ে হঠাৎ এমন ঘন কুয়াশা আবহাওয়ার অস্বাভাবিকতাকে নির্দেশ করে। সাধারণত পৌষ ও মাঘ মাসে এমন কুয়াশা দেখা যায়। গ্রীষ্মকালের এমন তপ্ত আবহাওয়ায় কুয়াশা পড়া নজিরবিহীন।