ঢাকা শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

খাদ্য অধিকার নিয়ে সম্মেলনে বক্তারা

টেকসই খাদ্যব্যবস্থা গড়তে আঞ্চলিক ঐকমত্য জরুরি

টেকসই খাদ্যব্যবস্থা গড়তে আঞ্চলিক ঐকমত্য জরুরি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১৫:৩৯ | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৩ | ১৫:৩৯

বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। তবে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা এবং সবার জন্য পর্যাপ্ত ও পুষ্টিকর খাদ্যপ্রাপ্তির ন্যায্যতা অর্জিত হয়নি। কভিড-১৯ মহামারি উত্তর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে খাদ্য ব্যবস্থায় সংকট রয়েছে। পাশাপাশি খাদ্য ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সরকারের নতজানু নীতি খাদ্যপ্রাপ্তি ও বিতরণে সমস্যা সৃষ্টি করছে। খাদ্য ও কৃষি ব্যবস্থাকে আরও ন্যায়সঙ্গত, টেকসই, জলবায়ু সহিষ্ণু করতে আঞ্চলিক ঐকমত্য গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। 

বুধবার ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার এবং কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলন ২০২৩’-এর প্রথম দিনে উদ্বোধনী অধিবেশন, প্লেনারি ও কারিগরি অধিবেশনে বক্তারা এসব বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এ আয়োজন করে।

উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চোধুরী। আরও বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সম্মানীয় অতিথি ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, নেপালের কৃষি ও জীবিকায়ন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সঞ্জীব কুমার কর্ণ এবং কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রমেশ সিং। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী স্বাগত বক্তব্য দেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ন ও খাদ্যের স্বল্পতা সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিতকরণে বড় চ্যালেঞ্জ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চলমান বৈশ্বিক সংকট। খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ খাদ্য উৎপাদনের রোল মডেল; ২০৩০ সালের মধ্যে চাহিদার অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনক্ষম দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, কৃষক ও জনগণের পরিশ্রম এবং সরকারের সুদূরপ্রসারী নীতিমালার কারণে দেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। আমাদের খাদ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। আশা করি বড় কোনো দুর্যোগ আমাদের কাবু করতে পারবে না। তবে দীর্ঘকালীন সমস্যা হলে, রাজনৈতিক বা অভ্যন্তরীণ টানাপড়েন যদি আক্রান্ত করে- তাহলে ব্যহত হতে পারে। খাদ্য ব্যবস্থা টেকসই করতে হবে। এর সংরক্ষণ, বিতরণ শক্তিশালী করতে হবে। কৃষকদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। 

অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, সবার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য চ্যালেঞ্জ থেকে গিয়েছে। বিশেষত উৎপাদনের পরে বাজারজাতকরণ, মজুত ও সংরক্ষণ, সর্বোপরি বিতরণের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। তিনি টেকসই কৃষিখাদ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। 

সঞ্জীব কুমার কর্ণ বলেন, নেপাল খাদ্যের অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কৃষি-খাদ্যব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে নেপাল সব অংশীজনকে নিয়ে খাদ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।

রমেশ সিং বলেন, বিগত এক দশকে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলো খাদ্য উৎপাদনে অনেক অগ্রসর হয়েছে। তবে উৎপাদনের সঠিক মূল্য ক্ষুদ্র উৎপাদকরা পান না। সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অব্যাহত রাখলেও সবাই এখনও এ সুবিধার আওতায় আসতে পারেনি।   

কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, পর্যাপ্ততার পাশাপাশি উৎপাদিত খাদ্যে মানুষের প্রবেশাধিকার খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলনে উঠে আসা সুপারিশগুলোর প্রতিফলন ঘটানো জরুরি বলে জানান তিনি।

এ ছাড়া সম্মেলনে প্লেনারি অধিবেশন ও কারিগরি অধিবেশনে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের গবেষক, অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞরা প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং আলোচনায় অংশ নেন। 

আরও পড়ুন

×