নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়ার প্রার্থী আজমত উল্লার ব্যাখ্যায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আজমত উল্লা বিনয়ের সঙ্গে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তার বক্তব্যে আমরা সন্তুষ্ট।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার সময় শোডাউন এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত আজমত উল্লার পক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজমত উল্লাকে কমিশনে তলব করে ইসি। দুই দফা চিঠি দিয়ে কেন তার প্রার্থিতা বাতিল করা হবে না- সে বিষয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

আজ রোববার বেলা ৩টার দিকে নির্বাচন ভবনে সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের উপস্থিতিতে আজমত উল্লার বক্তব্য নেওয়া হয়। আধা ধরে এ শোকজের বক্তব্য শুনে সিইসি এবং আজমত উল্লা সাংবাদিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

আজমত উল্লার ব্যাখ্যায় সন্তোষ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, অত্যন্ত চমৎকারভাবে ও বিনয়ের সঙ্গে উনি (আজমত উল্লা) দুঃখপ্রকাশ করেছেন। উনি বলেছেন, যদি (আচরণবিধি) ভঙ্গ হয়ে থাকে উনি দুঃখিত, অনুতপ্ত। আগামীতে আচরণবিধি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভুল কিছুটা অজ্ঞতাবশত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় পাঁচজনের বেশি লোকের উপস্থিতিতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে প্রার্থীর ব্যাখ্যা তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কশিনার জানান, মনোনয়নপত্র জমার দিন বেশ কিছু সংখ্যক কাউন্সিলরও তাদের দলবল নিয়ে এসেছেন শোডাউনের মতো করে। আমরা ওনাকে শোকজ করেছি। উনি বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নেই নি। কিন্তু উনার বক্তব্য বিবেচনা করছি। উনি তো লোকাল লিডার, উনি অত্যন্ত বিনয়ে সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা মনে করলে উনি লিখিতভাবে দেবেন। আমরা ফারদার কোনো তদন্ত করবো না।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ওনার বক্তব্যে আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের সাথে কো-অপারেট করে ভবিষ্যতে যাতে আচরণবিধি প্রতিপালিত হয়, সেটা সর্বোতভাবে চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা শোডাউনকে বড় করে দেখেছি।

আগামীতে আচরণবিধি প্রতিপালনে নির্বাচনী সংস্কৃতি গড়ে ওঠার আশা প্রকাশ করে সিইসি বলেন, আমাদের যে নির্বাচনী সংস্কৃতি, কৃষ্টি বহু বছর ধরে গড়ে উঠেছে, সেখানে এ ধরনের উচ্ছ্বাস (মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় দলবল নিয়ে উপস্থিতি) প্রকাশ হয়ে থাকে। এটাকে এক ধাক্কায় সুইচ টিপে বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। এজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে। আমরা আইন প্রয়োগের চেষ্টা করবো, ধীরে ধীরে শুভ কালচার গড়ে উঠবে।

আজমত উল্লার সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিষয়টি আলোচিত হয়নি বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, এটা সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে হয়েছে বলে জানিয়েছেন উনি। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করবেন বলেছেন। যেখান হস্তক্ষেপের প্রয়োজন মনে করেছি, সেখানে করেছি। তাদের চিঠি দিয়েছি।

ইসির পদক্ষেপের বিষয়ে সিইসি জানান, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে ইতোমধ্যেই দলের সাধারণ সম্পাদক, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার করছি। আশা করি, এটা একটা সচেতনতা সৃষ্টি করবে। আগামীতে যে ৫টি সিটি নির্বাচন রয়েছে, এগুলো একটা উদাহরণ তৈরি করে বাকিদের শিখতে সহায়তা করবে।