ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চায় হেফাজতে ইসলাম
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ | ০৮:২৫ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ | ০৮:২৬
সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ভাস্কর্য নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান চায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আলেমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়েছেন এবং তার সঙ্গে বৈঠক করার জন্য চেষ্টা করছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের নায়েবে আমির নূরুল ইসলাম বলেন, কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার দায় হেফাজতে ইসলামের ওপর চাপিয়ে তাদের ঘায়েল করার চেষ্টা হচ্ছে। আলেমদের শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক উপদেশ এবং দাবিকে বিতর্কিত করতে কুষ্টিয়ায় কে বা কারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছে।
সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে নূরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আমরাও চাই। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে ৩ ডিসেম্বর আর ফুটেজ প্রকাশ হয়েছে ৫ ডিসেম্বর। তাতে দেখা যায়, ভাস্কর্য ভাঙতে চিকন দু'জন মানুষ উঠছে। কিন্তু পরে ধরা হলো দাড়িওয়ালা মোটা দু'জনকে। তা ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজে দু'জনকে উঠতে দেখা গেলেও নামতে দেখা গেল না।
তিনি বলেন, সরকার, ক্ষমতাসীন দল ও সমর্থকদের ইসলামবিদ্বেষী একটি মহল কুষ্টিয়ার ঘটনার দায় ওলামায়ে কেরাম ও হেফাজতের নেতাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে।
সংগঠনের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নূরুল ইসলাম বলেন, দোলাইরপাড়ে ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ বিতর্ক তৈরি করেছে। শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে যে কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়টি ইসলামসম্মত নয় বলে সর্বসম্মত ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। একটি পত্র দিয়ে তা প্রধানমন্ত্রীকেও জানানো হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম ভাস্কর্য নির্মাণের মধ্য দিয়ে সরকারকে ইসলামের আকিদা, ইমান ও শিক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে পৌত্তলিকতা প্রসারের রাষ্ট্রীয় গোমরাহির পথ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও জননেত্রী পরিষদ নামে দুটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হেফাজতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আর্জিতে মদিনা সনদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে, যা এক ভয়াবহ ও সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের স্পষ্ট আলামত। যা শুধু হেফাজতে ইসলাম ও এর আমির পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত।
তিনি এ মামলা প্রত্যাহারের এবং সেই সঙ্গে চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় হেফাজতের উপদেষ্টা মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা অ্যাডভোকেট আব্দুর রাকিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মামুনুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।