সাক্ষাৎকার
সিনেমাতে ‘নিষিদ্ধ’ হওয়ার মত কিছুই তো ছিল না: রোশান
জিয়াউল রোশান। ছবি: ফেসবুক
বুলবুল ফাহিম
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ২০:০২ | আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ০০:৩২
চিত্রনায়ক জিয়াউল রোশান। প্রায় পাঁচ বছর সেন্সর বোর্ডর জাঁতাকলে পড়ে ছিল তার অভিনীত সিনেমা ‘মেকআপ’। সব বাধা পেরিয়ে অবশেষে মুক্তির অনুমতি পেয়েছে অনন্য মামুন পরিচালিত সিনেমাটি। এই সিনেমা ও চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে....
বেশ কয়েকবার ‘মেকআপ’ সিনেমাটি নিষিদ্ধ হয়। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গী কি ছিল?
সিনেমাটির শুটিং করি পাঁচ বছর আগে। এরপর সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ে। পরে আমরা জানতে পারি সিনেমাটি প্রদর্শনের অযোগ্য। এটি নিষিদ্ধ হবে সেটাই কখনো মনে হয়নি। সত্যি কথা বলতে, অভিনেতা হিসেবে এটি নিষিদ্ধের কারণ আমি খুঁজে পাই না। তারপরও এটা ঠিক কী করণে নিষিদ্ধ হয়েছিল সেটা বোর্ড সদস্যরা ভালো বলতে পারবেন। তবে, তারা কিছু সংশোধনী দেওয়ার পর শেষ পর্যন্ত সেন্সর সার্টিফিকেশন পেয়েছে। সে জন্য ভালো লাগছে।
বলা হয়েছে সিনেমাটিতে আপত্তিকর অনেক বিষয় ছিল। সেগুলো কি আপনার কাছেও আপত্তিকর মনে হয়েছিল?
আমি তো অভিনয় করছি। আমি আপত্তিকর তেমন কিছু পাইনি। এটা আসলে গল্পভিত্তিক সিনেমা। সিনেমাটিতে ‘নিষিদ্ধ’ হওয়ার মত কিছুই তো ছিল না। আমি এতোটুকু বলতে পারি, আমার জীবনে এটা ভালো সিনেমা হয়ে থাকবে। মনে হচ্ছে সিনেমাটা দুই/তিন বছর আগে মুক্তি পেলে সবার জন্য ভালো হত।
সিনেমাটি সেন্সর বোর্ড থেকে বারবার মুক্তি অযোগ্য বলায় অভিনেতা হিসেবে কতটা ব্যথিত হয়েছেন?
নিজের অভিনয় করা সিনেমা যখন বারবার সেন্সর বোর্ড থেকে বাতিল হয় তখন তো খারাপ লাগবেই। কারণ, সিনেমা হলে মুক্তির জন্যই আমরা অনেক পরিশ্রম করে সিনেমা করি। শুধু তাই নয়, একটা সিনেমার সঙ্গে আরও অনেক কিছু জড়িয়ে থাকে। ফলে সিনেমা যখন সেন্সর থেকে ফিরে যায় তখন সবাকেই সাফার কারতে হয়।
গেল বছর আপনার তিনটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এ বছর সিনেমা নিয়ে ভাবনা?
নতুন বছর আমার তিন-চারটি সিনেমা মুক্তি পাওয়ার কথা। যেগুলোর কাজ আগেই শেষ হয়েছে। এরমধ্যে ‘পুলসিরাত’, ‘জামদানি’ ও ‘প্রেমপুরাণ’ সেন্সর বোর্ডে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। প্রযোজকরা বছরের বিভিন্ন সময়ে এগুলো মুক্তি দেবেন। এছাড়া একেবারে নতুন তিনটি সিনেমা নিয়ে আলোচনা চলছে। সব ঠিক থাকলে দ্রুত সাইনিং শেষ করে শুটিং শুরু করতে পারব।
অনেকেই বলছেন দেশের সিনমার অবস্থা বেশ অস্থিতিশীল আবার কেউ বলছেন এগিয়ে যাচ্ছে। আপনি কোন পক্ষে?
আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কিন্তু আগে থেকেই নাজুক। তবে সরকার পরিবর্তনের পর সেটা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। আন্দোলন ও সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশের সংস্কৃতির অঙ্গনের ওপর প্রভাবটা বেশিই পড়েছে বলে মনে হয়। এটা আসলেই কাম্য নয়। কারণ, এই ইন্ডাস্ট্রির বহু মানুষের কর্মসংস্থান। এমনও মানুষ আছে যারা একটা সিনেমার টাকা দিয়ে তিন মাস পার করে দেন। যখন সিনেমা বন্ধ থাকে তখন তাদের কিছু করার থাকে না। কয়েকদিন আগেও দেখেছি প্রোডাকশনের মানুষ কাজ না পেয়ে রাস্তায় সবজি বিক্রি করছে। তবে আশার বিষয় হল সেই অচল অবস্থাটা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি বাঁচানো সম্ভব।
ওটিটিতেও কাজ করেছেন আপনি। এই প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আর কোনো পরিকল্পনা?
গেল বছর ‘অপলাপ’ নামের একটি ওয়েব কন্টেন্টে কাজ করেছি। আরও কিছু পরিকল্পনা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হল, আমি কাজ করাটাকে পছন্দ করি। এক্ষেত্রে মাধ্যম কোনো বিষয় না।
দেশের সিনেমা এখন ঈদ কেন্দ্রিক হয়েছে। আপনার কাছে কী তাই মনে হয়?
দেখুন, বাংলাদেশে সিনেমার বাজারটা আসলে ছোট। বলা চলে দেশের সিনেমা এখন উৎসব কেন্দ্রিক হয়েছে। বড় বড় উৎসবেই দর্শক বেশি সিনেমা দেখে দাই হয়তো প্রযোজকরা ঈদ বেশি সিনেমা মুক্তি দিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তবে এই বিষয়টা থেকে আমার বেরিয়ে আসা উচিৎ।
ঈদে একসঙ্গে ডজনখানেক ছবি মুক্তি পাওয়ায় কার বেশি ক্ষতি হচ্ছে?
এক ঈদে যখন একডজন সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে তখন কোনো সিনেমাই ভালো চলার সম্ভাবনা দেখা যায় না। দর্শক দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রযোজকদের যেমন ক্ষতি হয় তেমনি শিল্পীরাও একটা ক্ষতির মধ্যে পড়েন। আমার মনে হয়, ভালো কন্টেন্টের পাশাপাশি জাঁকজমক প্রচারণা করে যদি মুক্তি দেওয়া যায় তাহলে ঈদের বাইরেও সিনেমা চলবে।
- বিষয় :
- জিয়াউল রোশান
- ঢালিউড
- নায়ক
- নিষিদ্ধ