রাজস্থানে দর্জি খুনের জেরে ১৪৪ ধারা, ইন্টারনেট বন্ধ

ফাইল ছবি
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২৯ জুন ২০২২ | ২৩:৩২
মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে বিজেপির সাবেক মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার জেরে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের উদয়পুরে এক হিন্দু দর্জিকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন দুই মুসলমান যুবক। এ ঘটনায় উদয়পুরসহ গোটা রাজ্যে এক মাস ১৪৪ ধারা জারি ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাজারো পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার দিন গত মঙ্গলবারই অভিযুক্ত দুই যুবককে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন আজমির শরিফের প্রধান দেওয়ান জয়নুল আবেদীন আলী খান। তিনি বলেন, দেশে তালেবানি মানসিকতা মাথাচাড়া দিলে তা কখনও বরদাশত করা হবে না। কোনো ধর্মই মানবতার বিরুদ্ধে সহিংসতা সমর্থন করে না। এএফপি ও আলজাজিরা।
খবরে বলা হয়, অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, গোস মোহাম্মদ ও রিয়াজ আখতারি নামের দুই যুবক দর্জির দোকানে গ্রাহকের বেশে যান। পরে কানহাইয়া লাল নামের ওই দর্জি এক যুবকের শরীরের মাপ নেওয়ার সময় ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর শিরশ্ছেদের চেষ্টা করা হয়। অন্যজন ওই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন।
এরপর তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কানহাইয়াকে খুনের ভিডিও পোস্ট করে দায় স্বীকার করেন। এ সময় তাঁদের উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি পরবর্তী টার্গেট হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও হুমকি দিতে দেখা যায়। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে গেলে ধর্মীয় সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রোধে স্থানীয় প্রশাসন অতিরিক্ত ৬০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছে। একই সঙ্গে ৪ লাখ ৫০ হাজার বাসিন্দার ওই শহরে কারফিউ জারি করেছে। গোটা রাজস্থানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট। আগামী এক মাসের জন্য চার বা তার বেশিসংখ্যক মানুষকে রাজ্যের যে কোনো জায়গায় জড়ো হওয়া নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার নিহত দর্জির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে শত শত মানুষ লালের বাড়িতে জড়ো হন। এর আগের দিন এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে স্লোগান দেন। রাজস্থান পুলিশের শীর্ষ এক কর্মকর্তা এই হত্যাকাওে প্রচার না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি একেবারেই ভয়ংকর।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদয়পুরের ঘটনা হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে জাতীয়ভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা তৈরি করতে পারে।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট টুইটারে বলেছেন, অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্রুত বিচার হবে। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি। ভারতের শীর্ষ সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা এ ঘটনার তদন্ত করবে। কানহাইয়া বেশ কয়েকদিন ধরেই হত্যার হুমকি পাচ্ছিলেন।